বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দুই মুখপাত্রকে বহিষ্কারের পরও চাপে বিজেপি

  •    
  • ৬ জুন, ২০২২ ২৩:১৪

রাহুল গান্ধী টুইট করেছেন, ‘এ ধরনের গোঁড়ামি কেবল ভারতকে বিচ্ছিন্ন করেনি, বিশ্বব্যাপী দেশের অবস্থানকেও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। অভ্যন্তরীণভাবে বিভক্ত ভারত বাহ্যিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। ’

ইসলাম ও নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য দলের দুই মুখপাত্রকে বহিষ্কার করেও রেহাই পাচ্ছে না বিজেপি। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি ভারতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোও কেন্দ্রীয় সরকার ও শাসক দল বিজেপির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে।

বিশ্বের মুসলিম প্রধান দেশগুলোর সংগঠন অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) বিজেপির সদ্য প্রাক্তন মুখপাত্র নূপুর শর্মার ইসলাম ও নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের প্রতিবাদ করে বিবৃতি দিয়েছে। তবে ভারত পাল্টা ওআইসির সমালোচনা করে বলেছে- ‘আপনাদের এজেন্ডা বিভাজনমূলক।’

অনেক আরব দেশ ভারতীয় রাষ্ট্রদূতদের ডেকে নূপুর শর্মার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানানোর পর বিজেপি পদক্ষেপ নেয়। নূপুর শর্মা ও নবীন জিন্দালকে ৬ বছরের জন্য দল থেকে বরখাস্ত করা হয়।

ভারত উপসাগরীয় দেশগুলোর কূটনৈতিক ক্ষোভের মুখোমুখি হওয়ার পর দেশের অভ্যন্তরে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সোমবার এই ইস্যুতে শাসক দলকে আক্রমণ করেন।

টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘এ ধরনের গোঁড়ামি কেবল ভারতকে বিচ্ছিন্ন করেনি, বিশ্বব্যাপী দেশের অবস্থানকেও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। অভ্যন্তরীণভাবে বিভক্ত ভারত বাহ্যিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। বিজেপির লজ্জাজনক ধর্মান্ধতা শুধু আমাদের বিচ্ছিন্ন করেছে তা নয়, বিশ্বব্যাপী ভারতের অবস্থানকেও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।’

প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ও প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম টুইট করেছেন- ‘এটি অভ্যন্তরীণ সমালোচনা নয় বরং আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া; যা বিজেপিকে দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য করেছিল। ‘দেশের অভ্যন্তরে সমালোচনা বিজেপিকে দুই মুখপাত্রের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য করেনি। এটি শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া, যা বিজেপিকে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছিল।

‘শর্মা ও জিন্দাল ইসলামোফোবিয়ার আসল স্রষ্টা ছিলেন না। নূপুর শর্মা এবং নবীন কুমারও ইসলামোফোবিয়ার মূল স্রষ্টা নন। মনে রাখবেন, তারা রাজার কাছে বেশি অনুগত হওয়ার চেষ্টা করছিলেন।’

আম আদমি পার্টি (আপ) বিজেপি নেতাদের ইসলাম ও নবী মুহাম্মদ (স.) সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করেছে। দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী এবং আপ নেতা মনীশ সিসোদিয়া টুইট করে বলেছেন, ‘এই ছোট দেশগুলো (কাতার, কুয়েত, ইরান) ভারতের মতো একটি মহান দেশকে চ্যালেঞ্জ করার সাহস সঞ্চয় করেছে। মোদিজি এবং বিজেপি এই কাজটিই করেছে। আজ প্রতিটি ভারতীয় ব্যথিত। এটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক।’

মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল সিসোদিয়ার বক্তব্য রি-টুইট করেছেন।

এদিকে জমিয়ত-উলেমা-ই-হিন্দের সভাপতি মাওলানা মাহমুদ মাদানি নূপুর শর্মা ও নবীন জিন্দালের বিরুদ্ধে বিজেপির পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে তিনি বলেন, ‘বিজেপি একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে তার কাজ করেছে। আমি আশা করি সরকার তার দায়িত্ব পালন করবে এবং আইন অনুযায়ী তাদের শাস্তি দেবে।’

ওআইসির বিবৃতির প্রতিক্রিয়া

ওআইসির বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘আমরা ওআইসি মহাসচিবের অফিস থেকে জারি করা বিবৃতি দেখেছি। ভারত সরকার স্পষ্টভাবে ওআইসি সচিবালয়ের অনুপযুক্ত এবং সংকীর্ণমনা মন্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করছে। ভারত সরকার সব ধর্মকে সর্বোচ্চ সম্মান দেয়। একজন ধর্মীয় ব্যক্তিত্বকে অবমাননা করে আপত্তিকর টুইট ও মন্তব্য করেছেন কিছু ব্যক্তি। তারা কোনোভাবেই ভারত সরকারের মতামতের প্রতিনিধিত্ব করেন না। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘এটি দুঃখজনক যে ওআইসি সচিবালয় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, বিভ্রান্তিকর ও বিতর্কিত মন্তব্য করেছে। এটা শুধুমাত্র স্বার্থান্বেষীর স্বার্থের প্ররোচনায় বিভাজনমূলক এজেন্ডাকে উন্মোচিত করে। আমরা ওআইসি সচিবালয়কে তার সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ বন্ধ করা এবং সব ধর্মের প্রতি যথাযথ সম্মান দেখানোর আহ্বান জানাই।’

পাকিস্তানের প্রতিবাদের জবাব

অন্যদিকে পাকিস্তান ইসলাম ও নবী (সা.) সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের প্রতিবাদ জানালে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা পাকিস্তানকে বিপজ্জনক প্রচারণা ছড়ানো এবং ভারতে সাম্প্রদায়িক বৈষম্য সৃষ্টির চেষ্টা না করে তার ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা এবং কল্যাণের দিকে মনোযোগ দেয়ার আহ্বান জানাই।

‘পাকিস্তানে হিন্দু, শিখ, খ্রিষ্টান ও আহমদীসহ সংখ্যালঘুদের ওপর পদ্ধতিগত নিপীড়নের সাক্ষী হয়েছে বিশ্ব। ভারত সরকার সব ধর্মকে সর্বোচ্চ সম্মান দেয়। এটি পাকিস্তানের সম্পূর্ণ বিপরীত, যেখানে মৌলবাদীদের প্রশংসা করা হয় এবং তাদের সম্মানে স্মৃতিসৌধ তৈরি করা হয়।’

এ বিভাগের আরো খবর