ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে এত দিন ধরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের যে হুমকি দিয়ে আসছিলেন, তার পক্ষে জোরালো সমর্থনের কথা জানালেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ।
যুদ্ধে রাশিয়া হয়তো এ অস্ত্র ব্যবহার করতে বাধ্য হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রভাব বিস্তারকারী নিরাপত্তা পরিষদের এই ডেপুটি চেয়ারম্যান।
তিনি বলেছেন, ‘কারোরই ভুলে যাওয়া উচিত না, তেমন পরিস্থিতি তৈরি হলে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে বাধ্য হবে। অবশ্য কেউই পারমাণবিক যুদ্ধ চায় না।’
সংবাদমাধ্যম আরটি জানিয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধে তার দেশের অবস্থান এবং যুদ্ধ নিয়ে পরিকল্পনাসহ নানা বিষয়ে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন রাশিয়ার এই সাবেক প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী।
২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন মেদভেদেভ এরপর ২০১২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত পালন করেন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব।
মেদভেদেভ বলেন, 'আমি কাউকে ভয় দেখাতে চাই না। তবে অনেকে বলে থাকেন যে, এটি কখনই সম্ভব না। আসলে তারা ভুল। বিশ্ব এরই মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার প্রত্যক্ষ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি কেউই এটি দেখেনি।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।
যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকবার পারমাণবিক অস্ত্র হামলার হুমকি দিয়েছেন পুতিন। একই বার্তা এসেছে দেশটির নিরাপত্তা বিভাগ থেকেও।
যুক্তরাষ্ট্রসহ নানা দেশ রাশিয়ার এমন হুমকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। প্রতিরোধ এসেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকেও।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর এখন পর্যন্ত দেশটির ৮০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। একই সঙ্গে দেশ ছেড়েছে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ।
যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এ যুদ্ধ বন্ধ না হলে বিশ্বজুড়ে বড় ধরনের খাদ্যসংকট তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।