বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ইহুদি আগ্রাসনের মুখে আল-আকসা

  •    
  • ২৯ মে, ২০২২ ১৮:০৭

ইসরায়েলি আইনে আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ইহুদিদের উপাসনা করার অনুমতি নেই। ইসরায়েলের প্রধান ধর্মযাজক দ্বারাও এটি নিষিদ্ধ। তবে কিছু উগ্র ডানপন্থি ইসরায়েলি এটি মানেন না। তারা বিশ্বাস করেন, সেখানে তাদের প্রার্থনা করার অনুমতি দেয়া উচিত।

থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে জেরুজালেমে। আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে শত শত উগ্র ডানপন্থি প্রবেশ করায় সহিংসতার আশঙ্কা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে অবস্থান নিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের বিরোধী নেতা ইতামার বেন-গভি রোববার ভোরে সমর্থকদের নিয়ে মসজিদ প্রাঙ্গণে ঢুকে পড়েন। তাদের সবার হাতে ছিল ইসরায়েলের জাতীয় পতাকা। সেখানে ডানপন্থি ইহুদিদের সমাবেশ করার কথা রয়েছে। স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় শুরু হয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে আয়োজন।

আল জাজিরার নাজওয়ান সিমরি বলেন, ‘ইসরায়েলি বাহিনী রোববার সকালে কম্পাউন্ডের আল-কিবলি প্রার্থনা হলের ছাদ দখল করে। এতে সেখানে প্রার্থনা করতে আসা মুসলিমরা আটকা পড়েন। ইহুদি বসতিস্থাপনকারীদের যাতায়াতকে বাধাহীন করতে এ অবস্থান নেয় ইসরায়েলি পুলিশ।

‘ফিলিস্তিনি সাংবাদিক ও ফটোগ্রাফারদের আল-আকসা মসজিদে প্রবেশ করতে বাধা দেয়া হয়েছে। এমনকি গ্রেপ্তারের হুমকিও দিচ্ছে ইসরায়েলি পুলিশ।’

Israeli occupation forces brutally assault and arrest Palestinian girl Alaa Al-Khalafawi in Bab Al-Amoud in occupied Jerusalem. pic.twitter.com/KG4kCtmmg0

— PALESTINE ONLINE 🇵🇸 (@OnlinePalEng) May 28, 2022

ফিলিস্তিনের সংবাদমাধ্যম ওয়াফা নিউজ এজেন্সির খবরে বলা হচ্ছে, ‘মসজিদ প্রাঙ্গণে ফিলিস্তিনি প্রতিবাদকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ইসরায়েলি পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অন্তত ১৮ জনকে।’

ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি বলছে, বসতিস্থাপনকারীরা ওল্ড সিটিতে একটি অ্যাম্বুলেন্স কর্মীর ওপর হামলা চালান। আল-ওয়াদ এলাকায় একজন আহত ব্যক্তির কাছে যাওয়ার সময় ঘটনাটি তারা দেখেছে।

ফিলিস্তিনিদের উসকে দিতে কয়েকজন ইহুদি আল-আকসা মসজিদে প্রবেশের চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন অনেক প্রত্যক্ষদর্শী।

ইসরায়েলি আইনে আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ইহুদিদের উপাসনা করার অনুমতি নেই। ইসরায়েলের প্রধান ধর্মযাজক (রাব্বি) দ্বারাও এটি নিষিদ্ধ। তবে কিছু উগ্র ডানপন্থি ইসরায়েলি এটি মানেন না। তারা বিশ্বাস করেন, সেখানে তাদের প্রার্থনা করার অনুমতি দেয়া উচিত।

উগ্রবাদীদের এমন আচরণে ফিলিস্তিনিরা আছেন সার্বভৌমত্ব হারানোর শঙ্কায়। তারা বলছেন, অতি-ডানপন্থি ইসরায়েলিরা ‘আল-আকসা মসজিদ’ এবং ‘ডোম অফ দ্য রক’কে ইহুদি মন্দিরে প্রতিস্থাপনের চেষ্টা করছেন।

টুইটারে ছড়ানো একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, আল-কিবলি প্রার্থনা হলের দরজা সিল করে দিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। ফিলিস্তিনের সংবাদ সংস্থা আল কাস্তাল বলছে, ফিলিস্তিনিদের ভেতরে আটকে রাখার চেষ্টা চলছে।

من أمام المصلى القبلي هذه اللحظات.. الاحتلال يواصل حصاره للمصلين لتأمين اقتحام المستوطنين pic.twitter.com/bC0hse1YQB

— AlQastal القسطل (@AlQastalps) May 29, 2022

ইসরায়েলি পুলিশের এক মুখপাত্র বলেন, ‘ছোট একটি দল মসজিদের ভেতরে নিজেদের ব্যারিকেড করে রেখেছিল। বাইরে অবস্থানরত পুলিশ কর্মকর্তাদের দিকে বড় বড় পাথর ছুড়ছিল। তবে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।’

ইসরায়েলি পুলিশের এ তথ্য যাচাই করতে পারেনি আল জাজিরা।

ইসরায়েলি বাহিনীও ওল্ড সিটির বিভিন্ন স্থানে ব্যারিকেড দিয়েছে। শহরের প্রধান প্রবেশদ্বার দামেস্ক গেট ব্যবহারে ফিলিস্তিনিদের বাধা দিচ্ছে তারা।

#شاهد: جيش الاحتلال يعتدي بوحشية على سيدات فلسطينيات في شارع الواد بالقدس المحتلة. pic.twitter.com/N3Duu1Wp35

— 48 الإخبارية (@48nnews) May 29, 2022

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেনেহ বলছেন, ‘ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বৈধতার সিদ্ধান্তকে সম্মান করে না। তারা নিজেদের আইনের ঊর্ধ্বে মনে করে।’

ভয়েস অফ প্যালেস্টাইন রেডিওতে শনিবার দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আবু রুদেইনা বলেন, ‘দায়িত্বহীন এবং বেপরোয়া হয়ে জেরুজালেমে ইহুদি বসতিস্থাপনের অনুমতি দিয়ে আগুন নিয়ে খেলছে ইসরায়েল।

‘তাদের রুখতে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক বিশ্বকে এগিয়ে আসতে হবে। নিজেদের দায়িত্ব পালন করুন। ডাবল স্ট্যান্ড (দুই পক্ষেই থাকা) নেবেন না।

জেরুজালেমে উগ্রবাদীদের সমাবেশ ঘিরে অন্তত তিন হাজার ইসরায়েলি পুলিশ শহর ঘিরে রেখেছে।

দামেস্ক গেটের কাছে অবস্থান নিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। ছবি:রয়টার্স

ওল্ড সিটির মুসলিম কোয়ার্টারের সরু রাস্তায় প্রতি বছর এ ধরনের সমাবেশ করে উগ্র ডানপন্থি ইহুদিরা। হাজার হাজার ইহুদি কুচকাওয়াজে অংশ নেন; ইসরায়েলি পতাকা নেড়ে গান গান।

১৯৬৭ সালের এই দিনে পূর্ব জেরুজালেম দখলে নেয় ইসরায়েল। দিনটি উদযাপনের উদ্দেশ্যেই এই পদযাত্রা। আর ব্যবসা বন্ধ করে ঘরের থেকে এই পদযাত্রা মেনে নিতে বাধ্য হন ফিলিস্তিনিরা।

গত মে মাসে ইহুদিদের কুচকাওয়াজে রকেট হামলা হয়। গাজা উপত্যকা থেকে চালানো হামলার জবাবে ১১ দিন গাজা অবরুদ্ধ করে রাখে ইসরায়েল। প্রতিরোধ গড়েন ফিলিস্তিনিরাও। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার হিসাবে, সে সময়ে ২৬০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি এবং ১৩ জন ইসরায়েলি নিহত হন।

এবার শক্ত প্রতিরোধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে হামাস। জেরুজালেম এবং আল-আকসা মসজিদ রক্ষায় গাজা, অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং জেরুজালেমের ফিলিস্তিনিদের পাশাপাশি ইসরায়েলের ফিলিস্তিনি নাগরিকদের জেগে ওঠার ডাক দিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।

এ বিভাগের আরো খবর