বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সাংবাদিক শিরিন হত্যায় ইসরায়েলি মিথ্যাচার

  •    
  • ১৯ মে, ২০২২ ২০:৩৩

ইসরায়েলের প্রভাবশালী মানবাধিকার সংস্থা- বিটস্লেম বলছে, ইসরায়েল শিরিনের হত্যা নিয়ে যে ভিডিও প্রকাশ করেছে, সে জায়গাটি হত্যাকাণ্ডের স্থান থেকে ৩০০ মিটার (৯৮৫ ফুট) দূরে। শিরিনের কর্মস্থল আল জাজিরার সানাদ নিউজ ভেরিফিকেশন অ্যান্ড মনিটরিং ইউনিটও বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে। তারাও দাবি করেছেন ভিডিওটি ভুয়া।  

আল জাজিরার সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহকে যেদিন হত্যা করা হয়, সেদিন তার মাথায় ছিল হেলমেট, গায়ে ছিল ভেস্ট। যেখানে স্পষ্ট লেখা ছিল ‘প্রেস’।

গুলি হেলমেট ও ভেস্টের ঠিক মাঝখান দিয়ে শিরিনের ঘাড়ে বিদ্ধ হয়। এ সময় শিরিনের সহকর্মীরা এবং পথচারীরা তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করলে গুলি চলতে থাকে। তাই তারা এগিয়ে আসতে পারেননি। নিথর পড়ে ছিল শিরিনের দেহ।

শুরুতে ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা এই মৃত্যুর জন্য দায়ী। বিষয়টি প্রমাণে একটি ভিডিও প্রকাশ করে তেল আবিব। যেখানে দেখা যায়, একদল ফিলিস্তিনি গুলি ছুড়তে ছুড়তে একটি সরু গলি পার হচ্ছে।

ইসরায়েলের প্রভাবশালী মানবাধিকার সংস্থা- বিটস্লেম ওই ভিডিও ধারণের স্থানটি খুঁজে পেয়েছেন। তারা বলছে, ওই ভিডিওটি শিরিন হত্যাকাণ্ডের স্থান থেকে ৩০০ মিটার (৯৮৫ ফুট) দূরের একটি স্থান।

শিরিনের কর্মস্থল আল জাজিরার সানাদ নিউজ ভেরিফিকেশন অ্যান্ড মনিটরিং ইউনিটও বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে। তারাও দাবি করেছেন ভিডিওটি ভুয়া।

প্রপাগান্ডায় কাজ না হওয়ায় আগের অবস্থান থেকে সরে আসে ইসরায়েল সরকার। তারা এই হত্যার তদন্ত করার আশ্বাস দেয়। তবে শেষমেশ আগের রূপেই ফিরেছে ইসরায়েল সরকার। তদন্ত না করার ইঙ্গিত দিয়েছে তেল আবিব। অতীতে ইসরায়েলি সেনাদের হাতে ফিলিস্তিনি নিহতের ঘটনায় তদন্ত করে নিজ দেশে সমালোচিত হয়েছিল দেশটির সরকার।

পশ্চিম জেরুজালেম থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক ইমরান খান বলেন, ‘আসলে সক্রিয় সামরিক অভিযানে একজন চাকরিরত ইসরায়েলি সেনা অফিসার বা সৈনিকের বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি তদন্ত খুলতে হবে। ইসরায়েলের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিষয়টা এখন একেবারেই অসম্ভব।

‘তদন্ত হলে সরকারের ওপর হামলা হবে। বিরোধীরা এটিকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবে। এ ছাড়া সাধারণত ইসরায়েলিরা সেনাবাহিনীকে অন্য চোখে দেখে। তারা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে সেনারা তাদের রক্ষক।’

ইসরায়েলের জনপ্রিয় দৈনিক হারেটজের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ঘটনায় ফৌজদারি আইন লঙ্ঘনের কোনো প্রমাণ নেই। ইসরায়েলি সেনারা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তারা ভেবেছিল ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের দিকে গুলি ছোড়া হচ্ছিল। যদিও প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সাংবাদিক শিরিনের আশপাশে কোনো গুলি চলেনি।

গুলিবিদ্ধ সাংবাদিক শিরিনের নিথর দেহের পাশে এক সহকর্মী। ছবি: সংগৃহীত

শিরিনের শরীর থেকে বের করা বুলেটের টুকরা প্রমাণ হিসেবে রেখেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। তদন্তের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।

তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

ইসরায়েলের সামরিক পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বলছে, তদন্ত হলে ইসরায়েলি সেনাদের সন্দেহভাজন হিসেবে বিবেচনা করা হবে। বিষয়টি ইসরায়েলি সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

ইসরায়েলি দৈনিক হারেটজের বরাতে বৃহস্পতিবার এ খবর ছেপেছে জেরুজালেম পোস্ট।

সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ দুই দশকের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা করেছেন। ২০০০ সালে শুরু হওয়া দ্বিতীয় ইন্তিফাদা বা বিদ্রোহের সময় পশ্চিম তীরের প্রধান শহরগুলোতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বড় বড় হামলাগুলো কভার করে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন শিরিন।

পশ্চিম তীরের শহর জেনিনে গত ১১ মে ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের খবর কভার করার সময় গুলিতে নিহত হন ৫১ বছরের শিরিন। প্রত্যক্ষদর্শী এবং তার সহকর্মীদের দাবি, ইসরায়েলি স্নাইপারের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন শিরিন।

পূর্ব জেরুজালেমে নেয়া হচ্ছে সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহকের মরদেহ। ছবি: এপি

হারেটজের প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় শিরিনের পরিবার জানিয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী মৃত্যুর তদন্ত না করায় তারা বিস্মিত নয়।

‘আমরা এটিই আশা করছিলাম। এ কারণেই আমরা চাইনি তারা (ইসরায়েল) তদন্তে অংশ নিক। আমরা এই কাজের জন্য দায়ী যে কাউকেই জবাবদিহি করতে চাই।

‘যেহেতু তিনি একজন আমেরিকান নাগরিক, তাই আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি। সেই সঙ্গে একটি ন্যায্য ও স্বচ্ছ তদন্ত শুরুর পাশাপাশি এসব হত্যাকাণ্ড বন্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’

জবাব দিয়েছে ওয়াশিংটন। নিজের নাগরিকের হত্যার তদন্তে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।

এ বিভাগের আরো খবর