শ্রীলঙ্কার পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে, তার ছেলে নামাল রাজাপাকসেসহ ১৫ মিত্রের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির একটি আদালত।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে বৃহস্পতিবার এ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত।
বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় তদন্তেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
গত কয়েক মাস ধরেই শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে চরম মন্দা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে, মুদ্রাস্ফীতিও আকাশছোঁয়া। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী কিনতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ।
এ অবস্থায় ক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করে দেশটির সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে। এক পর্যায়ে রাজাপাকসে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়।
সরকারবিরোধী আন্দোলন গত সোমবার আরও বড় রূপ ধারণ করে। সেদিন সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে আন্দোলনে বসা বিক্ষুব্ধদের ওপর হামলা চালায় সরকার সমর্থকরা। এতে বেশ কিছু জায়গায় সংঘর্ষ হয়।
সংঘর্ষে সরকারদলীয় এমপি, পুলিশ সদস্যসহ নিহত হন নয়জন। আহত হন তিন শতাধিক।
আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন দ্বীপরাষ্ট্রটির প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে।
বিক্ষোভকারীরা উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশের কুরুনেগালা শহরে মাহিন্দা রাজাপাকসের পৈতৃক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। অন্য বেশ কয়েকজন সাবেক মন্ত্রীর বাড়ি ও গাড়িতেও আগুন দেয়া হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রথমে কলম্বো এবং পরে পুরো দেশে জারি করা হয়েছে কারফিউ।
আদালতের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আদালতে মাহিন্দা রাজাপাকসে ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়া হয়েছিল। তবে যে কোনো সন্দেহভাজনকে আটক করার ক্ষমতা পুলিশের আছে উল্লেখ করে এ আবেদন নাকচ করে দেন ম্যাজিস্ট্রেট।
সোমবারের হামলার শিকাররা বলেছেন, রাজাপাকসে এবং তার মূল সহযোগীরা নিজেদের প্রায় ৩ হাজার সমর্থককে বাসে করে রাজধানীতে নিয়ে গিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা করতে প্ররোচিত করেছিলেন।
অনুসারীরা তার বাসভবন থেকে বেরিয়ে লাঠি নিয়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালান বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
এদিকে দ্বীপরাষ্ট্রটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন রনিল বিক্রমাসিংহে। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার কথা তার।