অর্থনৈতিক, রাজনৈতিকসহ নানা সংকটে নিমজ্জিত দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছে ভারত।
জ্বালানি, খাদ্যদ্রব্যসহ নানা সংকটে দেশটিতে অস্থিরতা চলছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। আন্দোলনের মুখে সোমবার পদত্যাগ করেছেন দ্বীপরাষ্ট্রটির প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। এর পর থেকে বিভিন্ন জায়গায় ঘটছে সহিংসতার ঘটনা। এমন পরিস্থিতিতে তাদের পাশে থাকার কথা জানাল ভারত
ডেকান হেরাল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার ভারত বলেছে, শ্রীলঙ্কার গণতন্ত্র, স্থিতিশীলতা এবং অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে পাশে থাকবে ভারত।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছেন, ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় শ্রীলঙ্কায় যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন দেশটির জনগণের স্বার্থ রক্ষায় ভারত সব সময় কাজ করবে।
‘প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে শ্রীলঙ্কার গণতন্ত্র, স্থিতিশীলতা এবং অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে পাশে থাকবে ভারত।’
শ্রীলঙ্কাকে অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবিলায় ভারতের সহায়তার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার জনগণকে তাদের সংকট কাটিয়ে উঠতে ভারত এই বছরই ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি সহায়তা বাড়িয়েছে।
‘এ ছাড়া খাদ্য, ওষুধ ইত্যাদির মতো প্রয়োজনীয় জিনিসের ঘাটতি দূর করার জন্য ইতোমধ্যেই সহায়তা দিয়েছে ভারত।’
ভারত গত কয়েক মাসে শ্রীলঙ্কাকে দুটি ঋণ সহায়তা দিয়েছে। খাদ্য, ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ করতে প্রথমবার ১০০ কোটি রুপি আর জ্বালানি কেনার জন্য ৫০ কোটি রুপি দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভারত গত কয়েক মাসে সার্ক কাঠামোর অধীনে শ্রীলঙ্কায় ৪০ কোটি ডলারের কারেন্সি অদলবদল করেছে। দ্বীপ দেশটির এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন (এসিইউ) ৫১ কোটি ৫২ লাখ ডলারের দেনাও পিছিয়ে দিয়েছে নয়াদিল্লি।
শ্রীলঙ্কায় টানা কয়েক দিন ধরে চলা সরকারবিরোধী আন্দোলন সোমবার আরও বড় রূপ ধারণ করে। সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে আন্দোলনে বসা বিক্ষুব্ধদের ওপর হামলা চালায় সরকার সমর্থকরা। এতে বেশ কিছু জায়গায় সংঘর্ষ হয়। দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়ে ভর্তি হয় হাসপাতালে।
রাজধানী কলম্বোর কাছে নিত্তামবুয়া এলাকায় নিহত হন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল শ্রীলঙ্কা পদুজেনা পেরামুনার (এসএলপিপি) এমপি অমরাকীর্থি আথুকোরালা। এ ছাড়া সংঘর্ষে পুলিশ সদস্যসহ নিহত হয়েছেন অন্তত ছয়জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ। প্রথমে কলম্বো এবং পরে পুরো দেশে জারি করা হয়েছে কারফিউ। এমন প্রেক্ষাপটেও নির্দেশনা অমান্য করেই মাঠে আছেন আন্দোলনকারীরা।
বিক্ষোভকারীরা উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশের কুরুনেগালা শহরে মাহিন্দা রাজাপাকসের পৈতৃক বাড়ি ‘মেদামুলানা ওয়ালাওয়াতে’ আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। অন্য বেশ কয়েকজন সাবেক মন্ত্রীর গাড়িতেও আগুন দেয়া হয়েছে।