বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

করোনার প্রথম দুই বছরে অতিরিক্ত দেড় কোটি মৃত্যু

  •    
  • ৫ মে, ২০২২ ২০:৩৯

দুই বছরে ১ কোটি ৪৯ লাখ মৃত্যুর ৮১ শতাংশ হয়েছে মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। এর মধ্যে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে এই হার ৫৩ শতাংশ; উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে ২৮ শতাংশ। অন্যদিকে উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে এই সময়ে ১৫ শতাংশ এবং নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে এই হার ৪ শতাংশ।

করোনা মহামারি চলাকালীন গত দুই বছরে (২০২০-২০২১) বিশ্বজুড়ে অতিরিক্ত মৃত্যু হয়েছে অন্তত দেড় কোটি মানুষের। এসব মৃত্যুর জন্য করোনা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দায়ী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিওএইচও) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ডব্লিওএইচও বলছে, মৃত্যুর সংখ্যাটা ১ কোটি ৩৩ লাখ থেকে ১ কোটি ৬০ লাখ পর্যন্ত হতে পারে।

স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে যে মৃত্যু হার, মহামারি বা কোনো বিশেষ পরিস্থিতির মৃত্যু হারের সঙ্গে তুলনা করে এই অতিরিক্ত হার বের করা হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেন, ‘বিস্ময়কর তথ্যগুলো কেবল মহামারির প্রভাবকেই নয়, বিশ্বজুড়ে আরও স্থিতিস্থাপক স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিকেও নির্দেশ করে। শক্তিশালী স্বাস্থ্য তথ্য ব্যবস্থাসহ সংকটে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিষেবাগুলো কার্যকর রাখতে বিনিয়োগ প্রয়োজন।’

সরাসরি (রোগের কারণে) বা পরোক্ষভাবে (স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং সমাজে মহামারির প্রভাবের কারণে) মৃত্যুগুলো এই অতিরিক্ত তালিকায় যোগ করা হয়েছে। করোনা আক্রান্ত রোগীদের চাপে সে সময় অন্যান্য চিকিৎসা নিতে না পেরে মৃত্যুকে ফেলা হয়েছে পরোক্ষ তালিকায়।

অতিরিক্ত মৃত্যু বেশি হয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ইউরোপ এবং আমেরিকায়। এই হার ৮৪ শতাংশ। অতিরিক্ত মৃত্যুর প্রায় ৬৮ শতাংশ ঘটেছে মাত্র ১০টি দেশে।

দুই বছরে ১ কোটি ৪৯ লাখ মৃত্যুর ৮১ শতাংশ হয়েছে মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। এর মধ্যে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে এই হার ৫৩ শতাংশ; উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে ২৮ শতাংশ।

অন্যদিকে উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে এই সময়ে ১৫ শতাংশ এবং নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে ৪ শতাংশ মৃত্যু হয়েছে।

এই দুই বছরে মৃত্যুকে লিঙ্গ ও বয়সের ভিত্তিতে ভাগ করা হয়েছে। ডব্লিউএইচও নিশ্চিত করেছে, বিশ্বজুড়ে নারীর তুলনায় পুরুষের মৃত্যু হার বেশি। ৫৭ শতাংশ পুরুষের বিপরীতে নারী মৃত্যু ৪৩ শতাংশ। মোট মৃত্যুর মধ্যে বেশির ভাগই প্রাপ্তবয়স্ক। অতিরিক্ত মৃত্যুগুলো আবার নির্ভর করে জনসংখ্যার ওপর।

ডব্লিউএইচও-এর ডেটা, অ্যানালিটিক্স এবং ডেলিভারির সহকারী মহাপরিচালক সামিরা আসমা বলেন, ‘অতিরিক্ত মৃত্যুর হিসাব মহামারির প্রভাব বুঝতে অপরিহার্য। এগুলো মৃত্যু হার কমাতে এবং ভবিষ্যতের সংকট রোধে নীতিনির্দেশক তথ্য দিয়ে থাকে। অনেক দেশে ডেটা সিস্টেমে সীমিত বিনিয়োগের কারণে অতিরিক্ত মৃত্যুর প্রকৃত চিত্র আড়ালে থেকে যায়।

ইমারজেন্সি রেসপন্সের সহকারী মহাপরিচালক ইব্রাহিমা সোসাই পতন বলেন, ‘বিশ্বকে নিরাপদ রাখতে এবং অসহায়দের সেবা দেয়ার জন্য আমাদের প্রতিদিনের কাজের ভিত্তি হলো ডেটা। আমরা জানি তথ্যের ফাঁকফোকরগুলো কোথায়। অবশ্যই সেসব দেশের প্রতি আমাদের সমর্থন জোরদার করতে হবে। এতে প্রতিটি দেশই দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে পারবে।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিকবিষয়ক বিভাগের (ইউএন ডিইএসএ) সমন্বয়ে গঠিত একটি দল প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা বের করার কাজ করেছে। এই দলে আছেন বিভিন্ন দেশের শীর্ষ বিশেষজ্ঞরা। দলটি তুলনামূলক মৃত্যুর অনুমান তৈরির জন্য একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করে

পদ্ধতিটি অসাধারণ। কারণ অনেক দেশে এখনও নির্ভরযোগ্য মৃত্যু হারে নজরদারির সক্ষমতার অভাব রয়েছে। তাই এসব দেশ অতিরিক্ত মৃত্যু হার গণনার জন্য প্রয়োজনীয় ডেটা সংগ্রহ ও তৈরি করে না। ব্যবহার করে সার্বজনীনভাবে উপলব্ধ পদ্ধতি।

জাতিসংঘের ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল অ্যাফেয়ার্সের আন্ডার সেক্রেটারি লিউ জেনমিন বলেন, ‘মহামারিতে হারিয়ে যাওয়া জীবনের একটি প্রামাণিক মূল্যায়ন করার জন্য আমরা কাজ করছি। এটি মৃত্যুর অনুমান উন্নত করতে হু, ইউএন ডিইএসএ এবং অন্য অংশীদারদের সঙ্গে চলমান সহযোগিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।’

ইউএন ডিইএসএ-এর পরিসংখ্যান বিভাগের পরিচালক স্টেফান শোয়েইনফেস্ট বলেন, ‘ডেটার ঘাটতি মানুষের জীবনের জন্য গুরুতর পরিণতিসহ কোনো সংকটের প্রকৃত মূল্যায়ন করাকে কঠিন করে তোলে।’

এ বিভাগের আরো খবর