অবশেষে প্রকাশ্যে এলেন আফগান তালেবানদের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুনজাদা। কান্দাহারের ঈদগাহ মসজিদে শনিবার কয়েক হাজার মুসল্লির সামনে বক্তব্য রাখেন তালেবানের এই শীর্ষ নেতা। শেষবার ২০১৬ সালে তাকে দেখা গিয়েছিল প্রকাশ্যে।
আখুনজাদা বলেন, ‘বিজয়, স্বাধীনতা এবং সাফল্যের জন্য অভিনন্দন। এই নিরাপত্তাব্যবস্থা এবং ইসলামিক শাসন কায়েমের জন্য আপনাদের অভিনন্দন।’
গত আগস্টে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর থেকে কট্টর শাসনব্যবস্থার জন্য সমালোচিত হয়ে আসছে তালেবান। আমেরিকা রিজার্ভ জব্দ করে দেয়ায় অর্থনৈতিক মন্দা কাটাতে হিমশিম খাচ্ছে তালেবান সরকার।
এই পরিস্থিতির মধ্যে তালেবান শাসকদের ওপর ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে চেপেছে অতর্কিত বোমা হামলা। জঙ্গি সংগঠন আইএস কয়েকটির দায় স্বীকার করেছে। সংগঠনটি বলছে, তাদের টার্গেট শিয়া এবং সুফি মতাবলম্বীরা।
রমজানের শেষ দুই সপ্তাহে হামলা হয়েছে বেশি। সর্বশেষ শুক্রবার কাবুলে জুমার নামাজ শেষে মুসল্লিদের ওপর বোমা হামলায় কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হন। পুলিশ স্টেশন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও চলছে হামলা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্ট বলছে, ভিড় এড়াতে কান্দাহারে মুসল্লিদের সামনের কাতারে দাঁড়িয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন আখুনজাদা। তার কাছে সাংবাদিকদের যেতে দেয়া হয়নি। ২ ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করেছিলেন আখুনজাদা। নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুরোটা সময় তার মাথার ওপর দুটি হেলিকপ্টার ঘোরাঘুরি করছিল।
আফগানিস্তানজুড়ে ধারাবাহিক হামলায় আতঙ্কে আছেন সাধারণ বাসিন্দারা। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে, লোকজন ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।
কাবুলের বাসিন্দা আহমাদ শাহ হাশেমি বলেন, ‘আমাদের অবস্থা খুবই খারাপ। বিশেষ করে মসজিদে যা ঘটেছিল তার পর। অনেক যুবক ও বৃদ্ধ শহীদ হয়েছেন। আফগানিস্তানের জনগণের দুঃখ ছাড়া আর কিছুই নেই।’
আখুনজাদার আকস্মিক প্রকাশ্যে আসায় তালেবান সরকারে তার ভূমিকা নিয়ে জল্পনাগুলোর অবসান হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, এমনকি তার মৃত্যুর গুজবও।
আখুনজাদার বয়স এখন ৭০, বেশির ভাগ সময় থাকেন কান্দাহারে। মাঝেমধ্যে বিভিন্ন ঘটনায় অডিওবার্তা পাঠিয়ে থাকেন তিনি।
পাকিস্তানে ২০১৬ সালে আমেরিকার ড্রোন হামলায় তালেবানের শীর্ষ মোল্লা আক্তার মনসুর নিহত হলে তার স্থলাভিষিক্ত হন আখুনজাদা।
গত শুক্রবার এক অডিওবার্তায় আফগানিস্তানে হামলার বিষয়টি উল্লেখ না করে শক্তিশালী ইসলামি ও জাতীয় সেনাবাহিনী এবং শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থা গঠনে তালেবানের প্রশংসা করেন আখুনজাদা। এ সময় তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।