বাঘের উপপ্রজাতিগুলোর মধ্যে সুমাত্রান বাঘকে অন্যতম বিপন্ন প্রাণী হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। ধারণা করা হয়, বন্য পরিবেশে এই বাঘের সংখ্যা ৪০০টিরও কম। এমন পরিস্থিতিতে বিপন্ন প্রাণী হিসেবে সুমাত্রান বাঘকে সংরক্ষিত প্রাণী হিসেবে ঘোষণা করেছে ইন্দোনেশিয়া। এরপরও চোরা শিকারিদের ফাঁদে পড়ে মারা যাচ্ছে সুমাত্রান প্রজাতির বাঘ।
ভাইসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ইন্দোনেশিয়াতে ফাঁদে পড়ে মারা যাওয়া তিনটি বাঘের সন্ধান পাওয়া গেছে।
স্থানীয় পুলিশপ্রধান হেন্দ্রা সুকমানা জানিয়েছেন, সুমাত্রা দ্বীপের আচেহ প্রদেশের একটি পাম ওয়েলের বাগানে ফাঁদের কারণে পায়ে আঘাত পেয়ে মারা যাওয়া একটি পুরুষ ও একটি স্ত্রী বাঘের মরদেহের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর আধাকিলোমিটার দূরে ফাঁদের কারণে ঘাড়ে আঘাত পেয়ে মারা যাওয়া আরও একটি স্ত্রী বাঘের সন্ধান পাওয়া যায়।
আচেহর সংরক্ষণ সংস্থার প্রধান আগুস আরিয়ানটো জানিয়েছেন, যেখানে মৃত বাঘগুলো পাওয়া যায় তার আশপাশে আরও বেশকিছু ফাঁদ ছিল। যেগুলো সাধারণত স্থানীয় কৃষকরা বন্য শুয়োর ধরতে ব্যবহার করে থাকেন।
তবে শিকারিরাও বিপন্ন বন্যপ্রাণীকে ধরা, হত্যা ও বিক্রির কাজে এই ধরনের ফাঁদ ব্যবহার করে বলে জানা গেছে।
আরিয়ানতো এএফপিকে বলেন, ‘আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। যদি পরীক্ষা করে প্রমাণ হয়, বাঘের মৃত্যুর জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে এমনটা করা হয়েছে, আমরা কঠোর পদক্ষেপ নেব।’
গত এক বছরের মধ্যে সুমাত্রান বাঘ হত্যার এটিই সর্বশেষ ঘটনা। এর আগে আচেহ পুলিশ ফাঁদ দিয়ে বাঘ ধরা এবং তাদের দেহাবশেষ বেচার দায়ে গত বছরের জুনে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল।
এর আগে উত্তর সুমাত্রায় ইঁদুরের বিষ মেশানো একটি ছাগল খাওয়ার কয়েক দিন পর একটি সুমাত্রান বাঘ মারা যায়।
গত বছরের আগস্টে চোরা শিকারির দ্বারা ফাঁদে আটকাবস্থায় সুমাত্রান দ্বীপের একটি সংরক্ষিত অঞ্চলে দুটি শাবকসহ তিনটি বাঘকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
অক্টোবরেও রিয়াউ প্রদেশে একটি স্ত্রী বাঘের মৃতদেহ পাওয়া যায়। ফাঁদে আটকা পড়ে বাঘটির একটি পা ভেঙে যায়। ধারণা করা হয়েছিল, ফাঁদে আটকা পড়ে ডিহাইড্রেশনের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার প্রাকৃতিক সম্পদ ও বাস্তুতন্ত্রের সংরক্ষণ আইনের অধীনে সুমাত্রায় ইচ্ছাকৃতভাবে সুরক্ষিত প্রাণী হত্যার জন্য দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে পাঁচ বছরের জেল এবং ১০০ মিলিয়ন রুপিয়া (৭ হাজার ডলার) জরিমানা হতে পারে।
জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণবাদীদের মতে, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বহুলোক তাদের জীবিকা হারিয়েছে। জীবিকার তাগিদেই তারা অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে।