কিয়েভ থেকে সরে গিয়ে রাশিয়ার মূল আগ্রহ কৃষ্ণসাগরের বন্দরনগরী মারিওপোল ও দোনবাস। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, এরই মধ্যে মারিওপোল শহরের নিয়ন্ত্রন নিয়ে নিয়েছেন তাদের সেনারা। তবে ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ স্টিল কারখানা অ্যাজোভস্টালে এখনও রয়েছেন ইউক্রেনীয় সেনারা। এরই মধ্যে রাশিয়ার দেয়া আত্মসমর্পণের আল্টিমেটাম প্রত্যাখ্যান করেছেন তারা।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন অ্যাজোভস্টাল স্টিল কারখানায় অভিযানের পরিকল্পনা বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন। এর বদলে তিনি স্টিল কারখানায় অবরোধ চালিয়ে যেতে চান।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুর সঙ্গে আলাপের সময় পুতিন কারখানাটি অবরোধের নির্দেশ দিয়েছেন।
শোইগু এরই মধ্যে মারিওপোল দখলের দাবি করেছেন এবং রুশ সেনাদের এই সফলতার জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন।
এর আগে তিনি জানিয়েছিলেন, প্রায় ২ হাজারের বেশি ইউক্রেনীয় যোদ্ধা এখনও কারখানাটিতে রয়েছেন এবং সেখানে বিশাল ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার রয়েছে। এসব ইউক্রেনীয় যোদ্ধার মধ্যে মেরিন ও দেশটির জাতীয়তাবাদী আজভ ব্যাটালিয়নের সদস্য রয়েছেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এক টেলিভিশন আলোচনায় তার বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন, স্টিল কারখানাটি এমনভাবে অবরোধ করার, একটি মাছিও যাতে সেখান থেকে বেরোতে না পারে।
এর আগে গোয়েন্দা সূত্রের বরাতে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ৯ মে রাশিয়ার বিজয় দিবসকে সামনে রেখে ইউক্রেনে বড় ধরনের সামরিক সফলতা দেখাতে চাইছে দেশটি।
যুক্তরাজ্য বলছে, যুদ্ধক্ষেত্রে যত দিন যাবে তত দ্রুত ও শক্তিশালী হামলার মুখোমুখি হতে হবে ইউক্রেনকে। রুশ বাহিনী এরই মধ্যে দোনবাস থেকে ক্রামাটর্স্কে আক্রমণ করতে পারে। এরই মধ্যে শহরটিতে ব্যাপক মাত্রায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চলছে।
১৯৪৫ সালে নাৎসি জার্মানিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পরাজিত করার বিষয়টিকে স্মরণ করেই ৯ মে বিজয় দিবস পালন করা হয়। ইউক্রেন ও পশ্চিমা বিশ্বের ধারণা, দিনটিকে সামনে রেখেই যুদ্ধকে আরও এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্য স্থির করতে পারেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
ইউক্রেনকে ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’ এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের রুশ ভাষাভাষী বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।