শ্রীলঙ্কায় একযোগে বাড়ানো হয়েছে চাল, পাউরুটি ও বিশেষ ধরনের কোট্টু রুটির দাম। একই সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে বাস ভাড়া।
সংবাদ মাধ্যম সিলন টুডের প্রতিবেদন বলা হয়েছে, মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে কার্যকর হয়েছে নতুন এই মূল্য ও ভাড়া। কমপক্ষে ২০ থেকে ৩৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে এইসব নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য ও সেবার খরচ।
প্যাকেটজাত চাল ও জনপ্রিয় কোট্টু রুটির দাম বাড়ানো হয়েছে ২০ শতাংশ।
দেশটির রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি আসেলা সম্পাথ বলেন, ‘জ্বালানি এবং গমের আটার দাম বৃদ্ধির পরে মূল্য সংশোধনের এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
তবে তিনি বলেন, স্ন্যাকসজাতীয় অন্যান্য ছোট খাবারের দাম বাড়ানো হবে না।
দেশটির প্রভাবশালী সংগঠন অল সিলন বেকারি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (এসিবিওএ) পাউরুটির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রতিটি পাউরুটির দাম ৩০ রুপি বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৪০ রুপি।
এসিবিওএর চেয়ারম্যান এন. কে. জয়াবর্ধন বলেন, ‘পাউরুটি ছাড়া বেকারির অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে অন্তত ১০ রুপি করে।’
১৯ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে নতুন মূল্য তালিকা কার্যকর হবে বলে চেয়ারম্যান জানান।
ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্ট কমিশন বলেছে যে ন্যূনতম বাস ভাড়া ২০ রুপি থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ২৭ রুপি।
এর আগে বাস ভাড়া সংশোধনের বিষয়ে পরিবহন মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাস মালিক ও অন্যান্য পক্ষের আলোচনার পর এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
দেশ স্বাধীনের পর সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে ধুঁকছে দেশটি। নিত্যপণ্যের লাগামহীন দামে দিশেহারা মানুষ। কাগজের সংকটে বন্ধ হচ্ছে সংবাদপত্রের প্রকাশনা, বাতিল হয়েছে স্কুলের পরীক্ষা। ভয়াবহ মন্দায় প্রাণ বাঁচাতে সাগর পাড়ি দিয়ে ভারতের তালিম নাড়ুতে আশ্রয় নিচ্ছেন অনেকে।
ব্রিটেনের কাছ থেকে ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর এত বড় অর্থনৈতিক সংকট দেখেনি শ্রীলঙ্কা। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে পৌঁছানোয় খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধ আমদানিতে হিমশিম খাচ্ছে দেশটির সরকার।
শ্রীলঙ্কাজুড়ে নিত্যপণ্যের আকাশছোঁয়া দামে বিপর্যন্ত জনজীবন। জ্বালানির তীব্র সংকট আরও খারাপ করেছে পরিস্থিতি।
এক কেজি চাল কিনতে গুনতে হচ্ছে ১১০৬ শ্রীলঙ্কান রুপি, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৩৩০ টাকা। চিনির কেজির দামও একই। ৪০০ গ্রামের এক প্যাকেট গুঁড়া দুধের দাম ৩ হাজার শ্রীলঙ্কান রুপি বা প্রায় ৯০০ টাকা।
দুধ ও চিনির দাম বেড়ে যাওয়ায় এক কাপ চা ৩৮০ রুপি বা প্রায় ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে রেস্তোরাঁয়।