কৃষ্ণসাগরে রুশ যুদ্ধজাহাজ মস্কভা ডুবির পর থেকেই পুরো ইউক্রেনে হামলা জোরদার করেছে রুশ সেনারা। ইউক্রেনের শহর লেভিভেও নতুন করে হামলা শুরু হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে লেভিভের মেয়র আন্দ্রে স্যাদোভি অভিযোগ করে বলেছেন, রুশ সেনারা ইচ্ছাকৃতভাবে লেভিভের সাধারণ মানুষকে লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের ওয়ান প্লাস ওয়ান টিভি চ্যানেলে এক সাক্ষাৎকারে লেভিভে রুশ আক্রমণের বিষয়ে মেয়র আন্দ্রে স্যাদোভি বলেন, ‘এটা গণহত্যা, ইচ্ছাকৃতভাবে ইউক্রেনীয়দের ধ্বংস করা।’
মেয়র দাবি করেন, রাশিয়ার হামলায় লেভিভেই সোমবারে ছয়জন বেসামরিক ইউক্রেনীয় নিহত ও ১১ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজন শিশুও রয়েছে।
রুশ হামলায় আহত ১১ জনের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এর আগে রাশিয়ার সেনারা কিয়েভ ছেড়ে যাওয়ার পর ৯ শতাধিক মরদেহের খোঁজ পাওয়া গেছে; যাদের রুশ বাহিনী হত্যা করেছে বলে দাবি ইউক্রেনের।
কিয়েভের আঞ্চলিক পুলিশপ্রধান আন্দ্রি নেবিতোভ জানান, কোনো কোনো মরদেহের সন্ধান পাওয়া যায় রাস্তায়। আর বাকিগুলো ছিল মাটিচাপা দেয়া অবস্থায়।
পুলিশের কাছে থাকা তথ্যের সূত্র উল্লেখ করে তিনি জানান, যেসব মরদেহ পাওয়া গেছে, এদের কেউ গুলিতে, কেউবা অন্যভাবে হামলার শিকার হয়ে মারা গেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ইউক্রেনে গণহত্যা চালানোর দায়ে অভিযুক্ত করেছিলেন।
ইউক্রেন অভিযান নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্পর্কে বাইডেন বলেন, ‘আমি এটিকে গণহত্যাই বলব, কারণ নিশ্চিতের পর নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে যে একজন ইউক্রেনীয় হয়ে থাকার চিন্তাই মুছে ফেলতে চাইছেন পুতিন।’
রাশিয়া বরাবরই ইউক্রেনে বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালানোর বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, শুধুমাত্র সামরিক স্থাপনাতেই আঘাত হানছে রুশ সেনারা।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শুধু সোমবারেই ইউক্রেনের ৩৫১টি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে রুশ সেনারা।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
ইউক্রেনকে ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’ এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের রুশ ভাষাভাষী বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।