ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পরপরই খারকিভ শহরে আক্রমণ করে রুশ সেনারা। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে রুশ সেনাদের হামলায় পূর্ব খারকিভের পাঁচ শতাধিক বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন।
আল আরাবিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খারকিভের গভর্নর ওলেগ সিনেগুবভ টেলিগ্রামে দেয়া এক বার্তায় বলেছেন, রুশ সেনাদের হামলায় ৫০৩ জন নিহতের মধ্যে ২৪ জন শিশুও রয়েছে।
খারকিভ ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। যুদ্ধ শুরুর আগে এ শহরের জনসংখ্যা ছিল ১৫ লাখ। রুশ সীমান্ত থেকে এই শহর মাত্র ২৫ মাইল দূরে।
ইউক্রেনের দাবি, রুশ বাহিনীর অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল এই শহরের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করা। কিন্তু ইউক্রেনের প্রতিরোধের কারণে তা সম্ভব হয়নি।
কিয়েভের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মারিওপোলের থিয়েটারে হামলা ও বুচায় বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করেছে রুশ সেনারা, যা স্পষ্টত যুদ্ধাপরাধ। রাশিয়া বরাবরই বেসামরিক স্থাপনায় হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
এদিকে দুদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ইউক্রেনে গণহত্যা চালানোর দায়ে অভিযুক্ত করেছেন।
বাইডেন এমন সময় পুতিনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনলেন, যখন ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে নতুন করে রুশ সেনাদের হামলার আশঙ্কায় উদ্বেগ বাড়ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তেলের মূল্য নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এক পরিকল্পনার বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি পুতিনকে একজন স্বৈরশাসক হিসেবে উল্লেখ করেন ও তাকে গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত করেন।
এর আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে আখ্যা দিলেও এই প্রথমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে গণহত্যা শব্দটি উচ্চারণ করলেন। মার্চের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, রুশ বাহিনী ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধ করেছে।
বাইডেন বলেন, ‘আমি এটিকে গণহত্যাই বলব, কারণ নিশ্চিতের পর নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে যে একজন ইউক্রেনীয় হয়ে থাকার চিন্তাই মুছে ফেলতে চাইছেন পুতিন।‘
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
ইউক্রেনকে ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’ এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের রুশ ভাষাভাষী বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।