ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের চারদিক ঘিরে রাখা রুশ সেনারা ঘাঁটি গেড়েছিল বুচাতে। শহরটির অবস্থান কিয়েভের খুব কাছেই। এরই মধ্যে রুশ সেনারা বুচা থেকে চলে গেছে। ইউক্রেন কর্তৃপক্ষও শহরটির নিয়ন্ত্রণ বুঝে নিয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ সেনারা চলে যাওয়ার পর মঙ্গলবার বুচা শহরের মেয়র আনাতোলি ফেডোরুক বলেছেন, নগর কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত ৪০৩টি মৃতদেহ খুঁজে পেয়েছে। কর্তৃপক্ষের বিশ্বাস, রুশ সেনারাই বুচার এই বাসিন্দাদের হত্যা করেছে। মৃতদেহ উদ্ধারের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
তবে রয়টার্সের পক্ষে ফেডোরুকের দেয়া তথ্য যাচাই করা সম্ভব হয়নি। সংবাদমাধ্যমটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা বুচায় পাঁচজন নিহত ব্যক্তির দেহাবশেষ দেখেছে। যাদের মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু এই হত্যায় কোন পক্ষ দায়ী, তা স্বাধীনভাবে বের করতে পারেনি রয়টার্স।
রুশ সেনারা যখন কিয়েভে অভিযানের চেষ্টা করছিল, তখন বুচা শহরেও অবস্থান করছিল। এখন আর রাজধানী দখলের উদ্দেশ্য নয়। রাশিয়ার লক্ষ্য ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে শক্তি বৃদ্ধি করা। দোনবাস অঞ্চলে নিজের আধিপত্য বজায় রাখা।
কিয়েভের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মারিওপোলের থিয়েটারে হামলা ও বুচায় বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করেছে রুশ সেনারা, যা স্পষ্টত যুদ্ধাপরাধ। রাশিয়া বরাবরই বেসামরিক স্থাপনায় হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
শুধু মারিওপোল ও বুচাই নয়, ক্রামাটোর্স্ক শহরের রেলস্টেশনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৫০ জনের বেশি বেসামরিক নাগরিক মারা গেছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেন। তবে রাশিয়া এই হামলার দায় অস্বীকার করেছে। বরঞ্চ ইউক্রেনীয় সেনারাই এই হামলার জন্য দায়ী বলে দাবি করেছে রাশিয়া।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
ইউক্রেনকে ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’ এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের রুশ ভাষাভাষী বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।