রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পশ্চিমাদের উদ্দেশে বলেছেন, ইউক্রেনের পরিস্থিতি খারাপ করলে তাদের এর পরিণাম ভোগ করতে হবে। রুশ প্রেসিডেন্টের এমন বক্তব্যের পরপরই ফিনল্যান্ড সীমান্তে সামরিক সরঞ্জাম জড়ো করছে রাশিয়া, এমন খবর পাওয়া গেছে; যা রাশিয়ার পক্ষ থেকে পশ্চিমাদের জন্য একটি নতুন সতর্কবার্তা।
নিউজ উইকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যাচাই করা যায়নি এমন একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, রাশিয়ার উপকূলীয় ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিঙ্কির কাছে নিয়ে আসছে।
সোমবার টুইটারে শেয়ার করা ৪৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে রুশ সেনাদের রাশিয়ার তৈরি কে-৩০০পি ব্যাস্টন-পি উপকূলীয় ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফিনল্যান্ড সীমান্তের দিকে নিয়ে আসতে দেখা গেছে।
এই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদান নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়া। রুশদের বক্তব্য, এই দুই দেশের ন্যাটোতে যোগদান ইউরোপে স্থিতিশীলতা আনবে না।
টাইমস অফ লন্ডন যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ফিনল্যান্ড এই গ্রীষ্মেই ন্যাটোতে যোগ দিতে পারে। এস্তোনিয়া ও যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারাও জানিয়েছেন ফিনল্যান্ডের ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়টি।
এস্তোনিয়ার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহের ন্যাটোর বৈঠকে অংশগ্রহণও করেছে সুইডেন ও ফিনল্যান্ড।
ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সানা মারিন জানিয়েছেন, গ্রীষ্মের মধ্যে ন্যাটোতে যোগ দেয়ার জন্য আবেদন করার বিষয়টি বিবেচনা করছে তার দেশ।
একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে আমাদের স্বার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা রয়েছে।’
রাশিয়া থেকে ১৯১৭ সালে স্বাধীনতা লাভ করে ফিনল্যান্ড। এরপর থেকেই পারতপক্ষে দেশটি যেকোনো সামরিক জোটে যোগদান এড়িয়ে চলত। স্নায়ুযুদ্ধের সময়েও তারা নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে সরে আসেনি।
সম্প্রতি ন্যাটোভুক্ত নয় এমন একটি দেশে (ইউক্রেন) রাশিয়া হামলা চালালে ফিনল্যান্ড ও সুইডেন নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে সরে এসে ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়টি ভাবতে থাকে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। ক্রেমলিনের দাবি ছিল, ইউক্রেন কখনোই ন্যাটোতে যোগ দেবে না এবং তাদের নিরপেক্ষ অবস্থান ধরে রাখবে। কিন্তু ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি রুশ সামরিক অভিযান চলাকালীনও বেশ কয়েকবার ন্যাটোতে যোগদানের ইচ্ছা পোষণ করেন। যদিও ন্যাটোর পক্ষ থেকে ইউক্রেনকে সদস্য করে নেয়ার বিষয়ে সাড়া মেলেনি।