পাকিস্তানের পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ইমরান খানের সরকার উৎখাতের পর বসে নেই বিরোধী জোটের প্রধান শাহবাজ শরিফ।
প্রধানমন্ত্রী পদে লড়াইয়ে বিরোধী জোটভুক্ত পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি), জামিয়াত ওলেমা-ই-ফজল (জেইউআর-এফ) ও পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) নেতাদের পূর্ণ সর্মথন পেয়েছেন তিনি।
রোববার প্রধানমন্ত্রী পদে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পরই শরিক দলগুলোর সঙ্গে একান্তে বৈঠক শুরু করেন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই ৭০ বছর বয়সী শাহবাজ শরিফ।
দেশটির একাধিক সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রিত্বের লড়াইয়ে বিরোধী জোটের অংশীদারদের পূর্ণ সমর্থন আদায়ে নিরলস চেষ্টা শুরু করেন তিনি।
দেশটির অন্যতম বিরোধী দল ও বিরোধী জোটভুক্ত পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা আসিফ আলি জারদারি ও তার ছেলে বিলাওয়াল জারদারির সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।
বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রিত্বের লড়াইয়ে পিপিপি নেতারা তাকে সর্বাত্মক সর্মথন দিয়েছেন।
এ সময় অনাস্থা ভোটে পিপিপির সমর্থনের জন্যও এই দুই নেতাকে সাধুবাদ জানান শাহবাজ।
এরপর প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরিফ দেখা করেন জামিয়াত ওলেমা-ই-ফজল (জেইউআর-এফ) ও পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (পিডিএম) প্রধানদের সঙ্গে।
ইমরানবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করায় এই দুই নেতার প্রতি ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি নিজের প্রতি ফের সমর্থনও জোরালো করেন শাহবাজ।
কে এই শাহবাজ শরিফ
২০১৮ সালের আগস্ট থেকে দেশটির জাতীয় পরিষদে বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করে আসছেন শাহবাজ শরিফ।
তিনি পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন তিনবার। এখন পর্যন্ত এই প্রদেশে সবচেয়ে বেশি সময় মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন শাহবাজ।
দেশটির অন্যতম বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে রয়েছেন শাহবাজ শরিফ। তিনি পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদে সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন ১৯৮৮ সালে।
তিনি পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন ১৯৯৭ সালে।
১৯৯৯ সালে সেনা অভ্যুত্থানে সরকার উৎখাতের পর পরিবারসহ সৌদি আরবে নির্বাসনে যান শাহবাজ শরিফ। ২০০৭ সালে দেশে ফিরে আসেন তিনি।
দেশটির জাতীয় নির্বাচনে নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন জয়লাভ করলে তার ভাই শাহবাজ শরিফ দ্বিতীয়বারের মতো পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
দুর্নীতির অভিযোগে নওয়াজ শরিফ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর দলটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হয় তার ভাই শাহবাজ শরিফকে।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবে শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘ইসলামিক রিপাবলিক অফ পাকিস্তানের সংবিধানের অনুচ্ছেদ '৯৫-এর ১ ধারা অনুযায়ী এই সংসদ ঘোষণা দিচ্ছে যে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নিয়াজির ওপর সংসদের কোনো আস্থা নেই। ফলে ৪ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে।’