ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর একে একে নানা নিষেধাজ্ঞা এসেছে রাশিয়ার ওপর। নিষেধাজ্ঞা এসেছে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নামেও। এবার এই তালিকায় যুক্ত হলেন তার দুই মেয়ে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) থাকা তাদের সম্পদ জব্দের কথা জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।
শুক্রবার ইইউর অফিশিয়াল জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুতিনের দুই মেয়ে মারিয়া ভরোন্তসোভা ক্যাটেরিনা তিখোনোভার সম্পদ জব্দের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইইউর নিষেধাজ্ঞা পড়েছে রাশিয়ার বৃহত্তম ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান এসবার ব্যাংকের প্রধানের ওপরও। তবে পুতিনকন্যাদের কী পরিমাণ সম্পদ জব্দ হয়েছে সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
ইউক্রেনে অভিযানে নামার পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখন পর্যন্ত রাশিয়ার ৭০০ মানুষকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে; যুদ্ধে সমর্থন ও ক্রেমলিনের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কারণে এই সিদ্ধান্ত।
রয়টার্স জানিয়েছে, নতুন করে দুই শতাধিক ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইইউ। এদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ এবং রাশিয়ার সামরিক কর্মীও রয়েছেন।
এ ছাড়া সম্পদ জব্দ হওয়ার তালিকায় পড়েছে আরও চারটি ব্যাংক৷
পুতিনের পরিবারের অন্য সদস্যদের মতো মারিয়া-ক্যাটেরিনা সম্পর্কেও খুব বেশি কিছু তথ্য নেই সংবাদমাধ্যমের হাতে। ২০১৫ সালে এক সংবাদ সম্মেলনে পুতিন জানিয়েছিলেন, তার দুই মেয়ে রাশিয়ায় বসবাস করেন। তাদের পড়াশোনাও রাশিয়ায়।
বিবিসি বলছে, সোভিয়েত গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবির কর্মকর্তা থাকাকালে ১৯৮৩ সালে লুইদমিলাকে বিয়ে করেন পুতিন। বিয়ের সময় লুইদমিলা ছিলেন উড়োজাহাজের অ্যাটেনডেন্ট। ২০১৩ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়। এই দম্পতির দুই মেয়ে মারিয়া ও ক্যাটেরিনা।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের হামলা।
ইউক্রেন যেন ন্যাটোতে যোগ না দেয় এ ব্যাপারে বরাবরই তাদের সতর্ক করে আসছে রাশিয়া। সর্বশেষ যুদ্ধের কারণ হিসেবে তারা বলছে, দেশটিতে ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’ এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের রুশ ভাষাভাষী বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ।
যুদ্ধ শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নানা নিষেধাজ্ঞা দিতে শুরু করে রাশিয়ার ওপর। দেয়া হয় অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাও। জব্দ হতে থাকে সম্পদ। সেই ধারাবাহিকতা এখনও অব্যাহত রয়েছে।
এরই মধ্যে কয়েক দফা বৈঠকে বসেছে ইউক্রেন-রাশিয়া। তবে যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে কার্যত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। প্রতিদিনই যুদ্ধে হতাহতের ঘটনা ঘটছে। বাস্তুচ্যুত হচ্ছে অসংখ্য মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নানা স্থাপনা।