ভারতজুড়ে ধর্মীয় আচার-আনুষ্ঠানে ও জ্বালানি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা গরুর গোবর নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে। ব্ল্যাক ফাঙ্গাস মহামারির পেছনে এই গোবর ভূমিকা রাখছে বলে এবার তথ্য মিলেছে।
এক গবেষণাপত্রের বরাত দিয়ে ফাস্টপোস্ট শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
আমেরিকান সোসাইটি ফর মাইক্রোবায়োলজির জার্নাল এমবায়োতে চলতি এপ্রিলে এ-সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়েছে, গোবরের আগুন মিউকোরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস মহামারির কারণ হতে পারে।
করোনা পরিস্থিতিতে ভারতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। দেশটিতে এরই মধ্যে করোনা আক্রান্ত অনেক রোগীর মৃত্যু হয়েছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের কারণে।
প্রতিষেধক হিসেবে গোবর ব্যবহারে মানুষের শরীরে ছত্রাক সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেক বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
ছত্রাকজনিত রোগ মিউকোরমাইকোসিস বিরল এক সংক্রমণ। মিউকোর নামে একটি ছত্রাকের সংস্পর্শে এলে এই সংক্রমণ হয়। সাধারণত এই ছত্রাক পাওয়া যায় মাটি, গাছপালা, সার এবং পচন ধরা ফল ও শাকসবজিতে।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের তথ্যানুযায়ী, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণে মৃত্যুহার শতকরা ৫৪ শতাংশ।
গত বছরের মে মাসে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়ার পর ভারতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
গবেষণাপত্রের তথ্যানুযায়ী, মুকোরালেস-সমৃদ্ধ গরুর মলমূত্র একাধিক ভারতীয় আচার-অনুষ্ঠান এবং বিশেষ করে ভারতে করোনার সময় বড় প্রভাব ফেলেছিল। এর কারণে করোনার ক্ষয়ক্ষতি বেড়েছে।
গবেষক জেসি সাকিরা বলেন, করোনার অন্যান্য কারণ ছাড়াও আমরা ভারতের স্থানীয় কারণগুলো পর্যবেক্ষণ করেছি। সেখানে দেখা গেছে, গোবর পোড়ানোর পর যে ধোঁয়ার তৈরি হয়, তার সঙ্গে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সম্পর্ক রয়েছে।
করোনা সংকটে এর আগে গত বছর গুজরাটে ‘গোবর-থেরাপি’ নিয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছিল সংবাদমাধ্যমে। ‘গোবর-থেরাপি’ হলো, প্রথমে গোবর এবং গো-মূত্র একসঙ্গে মিশিয়ে একটি মণ্ড তৈরি করতে হবে। ওই মণ্ড শরীরে মাখিয়ে রোদে শুকোতে হবে। প্রলেপ শুকিয়ে গেলে গরুর দুধ দিয়ে ধুয়ে ফেলা হবে।
ওই সময় শ্রী স্বামীনারায়ণ গুরুকুল বিশ্ব বিদ্যাপ্রতিষ্ঠানাম (এসজিভিপি) নামের একটি আশ্রমে গোবর থেরাপি চালু করে কিছু মানুষ। তবে চিকিৎসকরা সতর্ক করে জানান, শরীরে গোবর মাখলে করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি তো মিলবেই না উল্টে অন্যান্য সংক্রমণের কারণ হতে পারে।