ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলাকে ট্র্যাজেডি অভিহিত করে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া। একই সঙ্গে ইউক্রেনের মতো ছোট দেশের ওপর বড় দেশ রাশিয়ার হামলাকে ক্ষমার অযোগ্য বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
রাশিয়ার সঙ্গে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ঘনিষ্ঠতা ও পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে তার বিষেদাগারের মধ্যেই এমন মন্তব্য করলেন পাকিস্তানি সেনাপ্রধান।
তিনি বলেছেন, ‘পাকিস্তান ক্রমাগত অস্ত্রবিরতি ও শত্রুতা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে আসছে। আমরা সংঘর্ষের দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য অবিলম্বে সব পক্ষের সংলাপের চেষ্টার প্রতি সমর্থন জানাই।’
শনিবার পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিন দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদে একটি নিরাপত্তা বৈঠকে এসব কথা বলেন কামার বাজওয়া।
২৪ ফেব্রুয়ারি দুই দিনের সফরে রাশিয়ায় যান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এদিকে ওইদিন থেকেই ইউক্রেনে তাদের কথিত সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া।
ইমরান খান প্রকাশ্যে ইউক্রেন হামলার সমর্থন না জানালেও তিনি দেশটির মিত্র পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর সমালোচনায় মুখর ছিলেন।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পাকিস্তানে ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন সরকারকে অপসারণের চেষ্টা করছে বিরোধীরা। এর পেছনে দেশটির সেনাবাহিনীর ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আর একদিন পরেই ৩ এপ্রিল পাকিস্তানের পার্লামেন্টে ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট হতে পারে। এর মধ্যেই ইউক্রেন ইস্যুতে এমন মন্তব্য করলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান।
ইউক্রেন ও পাকিস্তানের সম্পর্কের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের স্বাধীনতার সময় থেকেই দেশটির সঙ্গে পাকিস্তানের অসাধারণ প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। অন্যদিকে বিভিন্ন কারণে দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়ার সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক শীতল হয়ে পড়েছে। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে এই সম্পর্কে কিছু ইতিবাচক উন্নয়ন ঘটেছে।’
নিজের বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক নিয়েও মন্তব্য করেছেন সেনাপ্রধান কামার বাজওয়া।
তিনি বলেছেন, ‘পাকিস্তান গোষ্ঠী রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্থ করে মিত্রদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেও বিশ্বাস নেই আমাদের।’
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসঙ্গে কামার রাজওয়া বলেন, ‘দেশটির সঙ্গে আমাদের দীর্ঘ ও দুর্দান্ত কৌশলগত সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের অন্যতম বড় রপ্তানি বাজার। বিরোধে না জড়িয়েই চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী পাকিস্তান।’