পাকিস্তানের রাজনৈতিক অস্থিরতায় যেকোনো সময় ক্ষমতা হারাতে পারেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এরই মধ্যে তিনি দাবি করেছেন, বিদেশি শক্তির ইন্ধনেই তাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে তাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র চেষ্টা করছে বলে দাবি করেছেন ইমরান খান। ইমরানের অভিযোগ, তার বিরুদ্ধে সংসদে বিরোধী দলগুলোর আনা অনাস্থা প্রস্তাব ব্যর্থ হলে ভয়াবহ পরিণতির হুঁশিয়ারি দেয়া হুমকিমূলক চিঠি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এবার এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি দেয়া চিঠির বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে পাকিস্তান।
৩১ মার্চ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের তত্ত্বাবধানে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকের পর পাকিস্তানে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতকে তলব করে একটি প্রতিবাদলিপিও দেয়া হয়েছে। সে সময় পাকিস্তানের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বলা হয়, এ ধরনের ভাষা (চিঠিতে উল্লেখিত) ব্যবহার কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত।
ইমরান খানের অভিযোগের বিষয়ে যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র
ইমরান খানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র চক্রান্ত করছে, এমন দাবি অস্বীকার করেছে হোয়াইট হাউস। শুক্রবার হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়ার ‘চক্রান্তে’ যুক্তরাষ্ট্র দায়ী বলে যে অভিযোগ করেছেন তার মধ্যে ‘বিন্দুমাত্র সত্য’ নেই।
হোয়াইট হাউসের প্রেস ব্রিফিং চলার সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে হোয়াইট হাউসের গণযোগাযোগের পরিচালক কেট বেডিংফিল্ড বলেন, ‘এই অভিযোগের বিন্দুমাত্র সত্যতা নেই।’
জাতির উদ্দেশে ভাষণে যা জানিয়েছিলেন ইমরান
বৃহস্পতিবার দেয়া ভাষণে ইমরান খান বলেন, ‘আজ এখানে এসেছি কারণ ৮ বা ৭ মার্চ যুক্তরাষ্ট্র থেকে একটি চিঠি পেয়েছিলাম। এটি একটি স্বাধীন দেশ ও সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ছিল।
‘বিদেশ থেকে আসা অর্থে পাকিস্তানে সরকার পরিবর্তনের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের লোকদের ব্যবহার করা হচ্ছে, বেশির ভাগই না বুঝেই জড়িয়ে যাচ্ছে, কেউ আবার ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের বিরুদ্ধে অর্থ ব্যবহার করছে।
‘তারা আগে থেকেই জানত যে একটি অনাস্থা প্রস্তাব আসছে। তখন অনাস্থা প্রস্তাবও জমা দেয়া হয়নি। এর মানে তারা (বিরোধীরা) বিদেশিদের সঙ্গে মিলে এই কাজ করছে। ভিনদেশিরা বলেছিল, তারা পাকিস্তানের প্রতি ক্ষুব্ধ। এটা আসলে একটা অজুহাত।
‘তারা (বিদেশিরা) জানিয়েছিল, ইমরান খান অনাস্থার পদক্ষেপে হেরে গেলে তারা পাকিস্তানকে ক্ষমা করে দেবে। যদি পদক্ষেপ ব্যর্থ হয় তবে পাকিস্তানকে একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে।’