ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের প্রেক্ষাপটে পশ্চিমা বিশ্বে রকেটের গতিতে বাড়ছে রুশোফোবিয়া। শুধু রুশদের ক্ষেত্রেই নয়, ইউরোপের দেশ জার্মানিতে ঘৃণাসূচক হামলার শিকার হচ্ছে ইউক্রেনীয়রাও।
আরটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্মানির পুলিশ প্রধান হোয়েলগার মুঞ্চ জানিয়েছেন, রুশভাষী, এমনকি ইউক্রেনীয়রা প্রতিদিনই জার্মানিতে লাঞ্চনার শিকার হচ্ছেন, প্রতি সপ্তাহে এমন অভিযোগ ২০০টিতে ঠেকেছে।
তিনি বলেন, আমাদের সমাজে রুশভাষী ও ইউক্রেনীয় বংশোদ্ভূতদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধ হচ্ছে। আমরা প্রতি সপ্তাহে এ ধরনের প্রায় ২০০ অভিযোগ পাচ্ছি, যার অধিকাংশই রুশ বিরোধী হামলা।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকেই পুরো ইউরোপ জুড়ে রুশদের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে অপমান, হুমকি এমনকি শারীরিরক আক্রমণের মতো ঘটনাও ঘটছে। এমনকি রুশ মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুরের ঘটনাও ঘটছে।
এর আগে, শিশুদের নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন সেভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছে ডেনমার্কে রুশ শিশুরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। অধিকারকর্মীরা বলছে, জাতিগত উৎসের কারণে রুশ বংশোদ্ভূত শিশুরা স্কুলে ও অনলাইনে নির্যাতিত হচ্ছে।
শুধু ইউরোপেই নয়, ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রেও রুশ বিদ্বেষ বৃদ্ধি পেয়েছে। রুশোফোবিয়ার নতুন এই উন্মাদনার মাত্রা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে এমএসএনবিসির নিবন্ধে বলা হয়, ‘এই প্রবণতা একটি সমগ্র জাতিকে অমানবিক করে তুলছে। এটি একটি কঠোর নীতির প্রভাব সম্পর্কে আমাদের অন্ধ করে তুলতে পারে। আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো, রাশিয়ার ভিন্নমতের মানুষকে উপেক্ষা এবং তাদের সঙ্গে সাংস্কৃতিক যোগাযোগের পথ বন্ধ করায় আমরা আরও অমানবিক রুশ জাতি গড়ার পথ সুগম করছি।’
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
ইউক্রেনকে ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’ এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের রুশ ভাষাভাষী বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।