বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চেরনোবিলের বনাঞ্চলে আগুন, বড় বিপর্যয়ের শঙ্কা

  •    
  • ২৮ মার্চ, ২০২২ ১৩:১৬

ইউক্রেনের রাজনীতিবিদ ইন্না সোভসান বলেন, এরই মধ্যে চেরনোবিল জোনের ১০ হেক্টর বনাঞ্চল রাশিয়ার গোলা নিক্ষেপের ফলে সৃষ্ট আগুনে পুড়ে গেছে। আমরা ভয় পাচ্ছি, আগুন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পৌঁছে যেতে পারে। তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা এরই মধ্যে উচ্চপর্যায়ে রয়েছে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর প্রথম দিকেই চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ নেয় রুশ সেনারা। এবার ইউক্রেন কর্তৃপক্ষের দাবি, রাশিয়ার গোলা নিক্ষেপের কারণে চেরনোবিলের নিষিদ্ধ এলাকার বনাঞ্চলে আগুন লাগছে। যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় পারমাণবিক বিপর্যয়।

চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ঘিরে থাকা বনাঞ্চলের আয়তন ২৫ একর। বর্তমানে এই এলাকাটি রুশ সেনাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

মিররের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেন কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা রুশ গোলার আঘাতে সৃষ্ট আগুন পুরো বনাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্রেও আগুন পৌছে যেতে পারে। এমন অবস্থায় ইউক্রেন পারমাণবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে পারে, যা পুরো বিশ্বের জন্যও অপূরণীয় ক্ষতি নিয়ে আসতে পারে।

ইউক্রেনের রাজনীতিবিদ ইন্না সোভসান টুইটারে এক বার্তায় বলেন, আসন্ন নরক ঠেকাতে তেমন কিছু করার নেই ইউক্রেনের, কারণ চেরনোবিল এলাকা রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

তিনি অভিযোগ করেন, এরই মধ্যে চেরনোবিল জোনের ১০ হেক্টর বনাঞ্চল রাশিয়ার গোলা নিক্ষেপের ফলে সৃষ্ট আগুনে পুড়ে গেছে। আমরা ভয় পাচ্ছি, আগুন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পৌঁছে যেতে পারে। তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা এরই মধ্যে উচ্চপর্যায়ে রয়েছে।

এই বনাঞ্চলে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা বেশি থাকার কারণ হলো ১৯৮৬ সালে হওয়া চেরনোবিল পারমাণবিক বিপর্যয়। পারমাণবিক প্রযুক্তির ইতিহাসে চেরনোবিলের দুর্ঘটনাকেই সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই দুর্ঘটনার ফলে এখনও এই অঞ্চলে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা অত্যন্ত বেশি।

সুভসানের এই টুইটের আগে ইউক্রেনের পার্লামেন্টের সদস্য ল্যুদমিলা ডেনিসোভা বনাঞ্চলের আগুনের বিস্তারিত তুলে ধরেন।

তিনি অভিযোগ করেন, চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘিরে থাকা ১ হাজার বর্গমাইল এলাকায় এখন পর্যন্ত ৩১ বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এই এলাকায় এরই মধ্যে গাছপালাতে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা উচ্চ এবং এলাকাটিতে সাধারণ জনগণের চলাচল ও বসবাস নিষিদ্ধ।

ডেনিসোভা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এই বনাঞ্চলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তেজস্ক্রিয় বায়ুদূষণের জন্ম দিতে পারে। এ সময় তিনি আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি কমিশনকে (আইএইএ) এ অঞ্চলে বিশেষজ্ঞ ও দমকলকর্মী পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘আগুনের ফলে তেজস্ক্রিয়তা বায়ুমণ্ডলে মিশে যেতে পারে এবং বাতাসে অনেকদূরও অতিক্রম করতে পারে। ফলে ইউক্রেন, বেলারুশ ও অন্যান্য ইউরোপীয় দেশও হুমকিতে পড়তে পারে।’

যদিও রাশিয়ার স্টেট মিডিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চেরনোবিল নিষিদ্ধ এলাকায় কোনো ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি।

তবে ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর পর এবার পারমাণবিক বিপর্যয়ের ব্যাপারে এর আগেও সতর্ক করা হয়েছে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে। এর আগেও রাশিয়ার গোলা নিক্ষেপে জাপোরিজ্জায় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি ইউক্রেনের। সে সময় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্বকে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান।

ইউক্রেনের অভিযোগ ছিল, রুশ সেনারা ইচ্ছাকৃতভাবে পারমাণবিক চুল্লি লক্ষ্য করে গোলা নিক্ষেপ করে।

এদিকে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।

ইউক্রেনকে ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’ এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের রুশ ভাষাভাষী বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।

এ বিভাগের আরো খবর