ইউক্রেনে চলছে রাশিয়ার সামরিক অভিযান। দেশটির লুহানস্ক ও দোনেৎস্কের রুশ ভাষাভাষীদের রক্ষায় এবং দেশটিতে নব্য নাৎসিদের আধিপত্য ধ্বংস করতে এই সামরিক অভিযান- এমনটাই বলে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেন যুদ্ধে কোনো পশ্চিমা দেশ জড়ালে তাকে কঠোর পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুমকি দিয়েছে দেশটি। পশ্চিমা দেশগুলো এই হুমকিকে পারমাণবিক বোমা হামলার হুমকি হিসেবেই দেখছে।
এমন পরিস্থিতিতে এবার আরটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিরোশিমায় আমেরিকার প্রতিনিধিদের সফর উপলক্ষে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা দেশটির রাষ্ট্রীয় মাধ্যম এনএইচকেকে বলেছেন, রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ঝুঁকি ‘অবিশ্বাস্যরকম বাস্তব’।
এ ছাড়া তিনি বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ এরই মধ্যে দেখিয়ে দিয়েছে, পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়া কতটা কঠিন। যখন রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সম্ভাবনা খুবই বাস্তব, এমন সময় হিরোশিয়াম যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের প্রধান ইম্যানুয়েলের সফরের অভিজ্ঞতা আন্তর্জাতিক মহলকে পারমাণবিক বাস্তবতা নিয়ে বিশ্ববাসীকে শক্ত বার্তা দেবে।
এ সময় কিশিদা ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানকে আগ্রাসন হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এমন পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক বিধি ও শান্তির জন্য হুমকি।
এদিকে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর আগেই রাশিয়ার পারমাণবিক বাহিনীকে উচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এমন পরিস্থিতিতে ফ্রান্সের পক্ষ থেকেও জানিয়ে দেয়া হয়েছে, শুধু রাশিয়ার কাছেই পারমাণবিক অস্ত্র আছে, এমন তো নয়।
এমন পরিস্থিতিতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে রাশিয়ার নীতি আবারও জানিয়েছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। তিনি বলেন, ‘একমাত্র রাশিয়ার অস্তিত্ব হুমকিতে পড়লেই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে দেশটি।’
বিশ্বের ইতিহাসে একমাত্র দেশ জাপান, যারা পারমাণবিক বোমা হামলার শিকার হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একেবারে শেষদিকে ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট জাপানের হিরোশিমাতে ও ৯ আগস্ট নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ করে যুক্তরাষ্ট্র। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই দেশটির অবস্থান পারমাণবিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে।
তবে ইউক্রেনে রুশ হামলা বিশ্ব পরিস্থিতি বদলে দিচ্ছে। পারমাণবিক অস্ত্রবিরোধী দেশ হিসেবে জাপানের পরিচয় থাকলেও এবার দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিনজো অ্যাবে মনে করছেন, পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা উচিত জাপানের।