বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ছেলের খুনের আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলেন না আসানসোলের ইমাম

  •    
  • ২৬ মার্চ, ২০২২ ২২:৪৯

আইনজীবী স্বরাজ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘৪৮ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। নিজের ছেলের খুনিদের বিরুদ্ধে বাবা সাক্ষ্য দিলেন না, এমনটা এর আগে দেখিনি।’

নিজের ছেলেকে খুনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলেন না আসানসোলের ইমাম ইমদাদুল্লা রাশিদ। এতে বেকসুর খালাস পেয়েছে অপ্রাপ্তবয়স্ক দুই আসামি।

রাশিদ বলেন, ‘নিজের চোখে দেখিনি। কে খুন করেছে জানি না। তাই মিথ্যা সাক্ষী দেব না।’

২০১৮ সালের ২৮ মার্চ রামনবমীর মিছিল নিয়ে সংঘর্ষের জেরে খুন হন আসানসোলের স্থানীয় মসজিদের ইমাম ইমদাদুল্লা রশিদের ছেলে দশম শ্রেণীর ছাত্র সিবগতুল্লা। খুনের ঘটনায় প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলে ওঠে আসানসোল রাণীগঞ্জ অঞ্চল। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার রূপ নেয় সেই সংঘর্ষ।

ওই সময় সন্তানহারা বাবা ইমাম রাশিদ আসানসোলের রেল পাড়ার রাস্তায় ঘুরে ঘুরে হাতজোড় করে সবাইকে কাতর আর্জি জানিয়েছিলেন, প্রতিহিংসার আগুনে কেউ যেন সন্তানহারা না হন । সন্তানহারা বাবার সেই আবেদনে শান্ত হয়েছিল রাণীগঞ্জ অঞ্চল।

ওই ঘটনার চার বছর পর আবার আসানসোলের ইমাম ইমদাদুল্লা রশিদ সমাজের সামনে ব্যতিক্রমী মানবিকতার অনন্য নজির হয়ে সামনে এলেন। সিবগতুল্লা অপহরণ ও খুনের মামলায় গ্রেপ্তার পিন্টু যাদব ও বিনয় তিওয়ারির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে আদালতে যাননি তিনি।

ইমাম ইমদাদুল্লা রশিদের যুক্তি, ‘নিজের চোখে দেখিনি, কে ছেলেকে খুন বা অপহরণ করেছে। তাই মিথ্যা সাক্ষ্য দেব না।’

ইমাম রশিদ নিজের যুক্তিতে অনড় থাকায় এবং অন্য সাক্ষীরা অভিযুক্ত খুনীদের চিনতে না পারায় আসানসোলের অতিরিক্ত জেলা বিচারক শরণ্যা সেন প্রসাদ দুই আসামিকে মুক্ত করে দেন।

এই মামলার সহকারী প্রধান আইনজীবী স্বরাজ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘৪৮ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। নিজের ছেলের খুনিদের বিরুদ্ধে বাবা সাক্ষ্য দিলেন না, এমনটা এর আগে দেখিনি।’

সন্তানহারা বাবা আসানসোলের ইমাম ইমদাদুল্লা রশিদ বলেন, ‘চিরকাল আমি সত্যের জন্য লড়াই করে এসেছি। সত্যকে নিয়েই একজন ইমাম হিসেবে বেঁচে থাকতে চাই। তাই আমি নিজে কারও নাম পুলিশকে জানাইনি। যারা গ্রেপ্তার হয়েছিল, তাদের পরিবারের কেউ আমার কাছে এসেছিলেন।

‘আমি তাদের বলেছিলাম, আমি যা চোখে দেখিনি তা বলব না। আর ওরা যদি পাপ না করে থাকে, তাহলে ওরা স্বাভাবিক নিয়মে মুক্তি পাবে।’

চার বছর আগে এক বড়োসড়ো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার হাত থেকে আসানসোল রাণীগঞ্জ অঞ্চলকে বাঁচিয়ে রাজ্যের মানবিক মুখ হয়ে উঠেছিলেন ইমাম রশিদ।

এ বিভাগের আরো খবর