ইউক্রেনে চলছে রুশ সামরিক অভিযান। ইউক্রেনীয় সেনাদের দাবি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে রুশ সেনারা। তবে হতাহতের বিষয়টি স্বীকার করে নিলেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ইউক্রেনীয় দাবির বিষয়ে কিছুই বলছে না রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
এবার আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী মিখাইল ফেদোরভ বলেছেন, যুদ্ধে নিহত রুশ সেনাদের শনাক্ত করতে ফেসিয়াল রিকগনিশন সফটওয়্যার ব্যবহার করছে কিয়েভ। যাতে নিহত সেনাদের পরিবারকে তাদের মৃত্যুর সংবাদ পৌঁছে দেয়া যায়।
ফেদোরভ বলেন, নিহত সেনাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের অ্যাকাউন্ট খুঁজে পেতে নিউ ইয়র্কভিত্তিক ফেসিয়াল রিকগনিশন সফটওয়্যার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ‘ক্লিয়ারভিউ এআই’-এর প্রযুক্তি ব্যবহার করছে ইউক্রেন।
তিনি বলেন, পরে কিয়েভ কর্তৃপক্ষ নিহত রুশ সেনাদের আত্মীয়দের মৃত্যুর খবর জানায় ও মরদেহ সংগ্রহ করার ব্যবস্থা করতে বলে।
‘সেই সেনাদের মায়েদের প্রতি সৌজন্য হিসেবে, যাতে অন্তত তারা জানতে পারেন যে তারা তাদের সন্তানদের হারিয়েছে এবং তারা যাতে মরদেহ সংগ্রহ করতে সক্ষম হন।’
তবে ঠিক কতজনকে ফেসিয়াল রিকগনিশনের মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়েছে, সেই সংখ্যা জানাতে অস্বীকার করেছেন ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী মিখাইল ফেদোরভ। তবে তিনি দাবি করেন, সংখাটি ‘খুব বেশি’।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জ্যেষ্ঠ এক ন্যাটো কর্মকর্তা বলেছেন, এক মাসের রুশ সামরিক অভিযানে ৭ হাজার থেকে ১৫ হাজার রুশ সেনা নিহত হয়েছে।
ন্যাটো কর্মকর্তা আরও বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার রুশ সেনা লড়াইয়ে আহত অথবা নিহত হয়েছে।
যদিও রাশিয়া তাদের সেনাদের মারা যাওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করছে না। ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর এক সপ্তাহ পর রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, ৪৯৮ জন রুশ সেনা ইউক্রেনে নিহত হয়েছে ও আহত হয়েছে প্রায় পনেরো শ সেনা। ২ মার্চ দেয়া তথ্যই ছিল রাশিয়ার পক্ষ থেকে দেয়া সেনা হতাহতের সর্বশেষ।
মাত্র ৩০ দিনের যুদ্ধে ১৫ হাজার রুশ সেনা নিহত হয়েছে, অথচ আফগানিস্তানে ১০ বছরের সামরিক অভিযানে ১৫ হাজার সেনা হারিয়েছিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন।
তবে ইউক্রেনও তার সেনা হতাহতের বিষয়ে কমসংখ্যক তথ্যই সরবরাহ করে। দেশটির সেনা হতাহতের বিষয়ে প্রায় ২ সপ্তাহ আগে প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছিলেন, প্রায় ১ হাজার ৩০০ ইউক্রেনীয় সেনা রুশদের সঙ্গে লড়াইয়ে নিহত হয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
ইউক্রেনকে ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’ এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের রুশ ভাষাভাষী বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।