দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে চালানো গণহত্যার সময় ভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন বরিস রোমান্সচেঙ্কো; তবে এবার আর ভাগ্য সহায় হলো না।
রুশ সেনাদের হামলায় শুক্রবার ইউক্রেনের খারকিভ শহরে নিজ বাসায় ৯৬ বছর বয়সী এ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
তার স্বজনদের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বরিসের মৃত্যুর খরব নিশ্চিত করে গভীর শোক প্রকাশ করেছে স্থানীয় বুচেনওয়াল্ড অ্যান্ড মিটেলবাউ-ডোরা মেমোরিয়ালস ফাউন্ডেশন।
১৯২৬ সালের ২০ জানুয়ারি ইউক্রেনের সুমি শহরের বন্দারিতে এক কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বরিস।
সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণের পর ১৯৪২ সালে নাৎসি বাহিনী বরিসকে আটক করে। পরে তাকে জার্মানিতে নির্বাসিত করা হয়। সেখানে তাকে কঠোর পরিশ্রম করতে বাধ্য করা হয়।
১৯৪৩ সালে পালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন এই ব্যক্তি। তখন তাকে পাঠানো হয় বুচেনওয়াল্ড কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে। ১৯৪৫ সালে এই ক্যাম্পেই হত্যা করা হয় ৫৬ হাজার ৫৪৫ জনকে।
বরিস মিটেলবাউ-ডোরার সাবক্যাম্পের পাশাপাশি কুখ্যাত বার্গেন বেলসেন এবং পিনেমেন্ডে ক্যাম্পেও তিনি সময় কাটিয়েছেন। ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের দ্বারা শিবির থেকে মুক্তির ৬৭তম বার্ষিকী উদযাপন করতে বুচেনওয়াল্ডে গিয়েছিলেন বরিস।
মানবসভ্যতার ইতিহাসে এ যাবৎকালের সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। ১৯৩৯ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত চলে এই যুদ্ধ।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
ইউক্রেনকে ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’ এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের রুশ ভাষাভাষী বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া।
ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।