ইউক্রেনে চলছে রুশ সামরিক অভিযান। তবে রাশিয়ার হামলার পাল্টা জবাব দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে ইউক্রেন। সামরিক অভিযানের শুরুর দিকেই প্রথম কোনো ইউক্রেনীয় নগরী হিসেবে খেরসনকে দখল করতে সক্ষম হয় রুশ সেনারা। এরপর থেকেই শহরটিতে রুশবিরোধী আন্দোলন চলছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রুশ সেনারা দখলকৃত খেরসনের দক্ষিণের শহরে ইউক্রেনীয় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি করছে ও স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ করছে।
একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে শহরের ফ্রিডম স্কয়ারে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেছে, মনে হচ্ছিল যেন তাদের ওপর রকেট প্রজেক্টাইল আঘাত হেনেছে। এ সময় এলাকাটিতে সাদা ধোঁয়া দেখা যায় এবং গুলির শব্দ শোনা যায়।
সিসিটিভি ফুটেজে খেরসনে গুলির ঘটনা। ছবি: সংগৃহীত
ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, রাশিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী দৌড়ে আসে এবং জনসমাবেশ লক্ষ্য করে স্টান গ্রেনেড ও গুলি নিক্ষেপ করতে থাকে। কমপক্ষে ১ জন আহত হয়েছে।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা একটি ভিডিও টুইটার হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন, সেখানে দেখা যায় ইউক্রেনীয় পতাকা বাহুতে লাগানো এক ব্যক্তি গুলিতে আহত হয়েছে। সেই ব্যক্তি আহত হওয়ার পর ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়া ইউক্রেনীয়রা ফেরত আসে ও আহত ব্যক্তিকে ঘিরে ধরে। এ সময় রাস্তায় রক্ত দেখা যায়। পুরো ভিডিওতে ধারাবাহিকভাবে গুলির শব্দ শোনা গেছে।
রাশিয়া খেরসনের এই ঘটনা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি।
২০১৪ সালে রাশিয়ার সঙ্গে অধিভুক্ত হওয়া ক্রিমিয়ার কাছেই খেরসনের অবস্থান। শহরের বাসিন্দা আনুমানিক ২ লাখ ৫০ হাজার। এটিই প্রথম কোনো বড় শহর, যা ইউক্রেনে রাশিয়া হামলা শুরুর পর দখলে নেয়। এরপর থেকেই শহরের বাসিন্দারা নিয়মিতই রুশবিরোধী আন্দোলন, পদযাত্রা চালিয়ে আসছে। ইউক্রেনের পতাকা ওড়ানোর মাধ্যমে কিয়েভের প্রতি তাদের সমর্থন ব্যক্ত করছে।
এর আগে ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ বলেছিল, রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা খেরসনে রুশ আক্রমনের প্রতিবাদে আন্দোলন করার জন্য ৪০০ জনকে আটক করেছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
ইউক্রেনকে ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’ এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের রুশ ভাষাভাষী বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।