কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোর যৌথ মঞ্চ হুরিয়াত কনফারেন্সের নেতা মিরওয়াইজ ওমর ফারুককে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানোয় তীব্র সমালোচনা করেছে ভারত।
আগামী সপ্তাহে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হবে ওআইসির এই বৈঠক।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘ওআইসির এই সিদ্ধান্ত সন্ত্রাসবাদে জড়িত ব্যক্তি এবং সংস্থাকে উৎসাহিত করার সমান।’
মুসলিম দেশগুলোর সংগঠনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে ডাক পেয়েছেন অল ইন্ডিয়া হুরিয়ত কনফারেন্সের চেয়ারম্যানও।
ভারতের তরফে স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে, ‘আমরা আশা করি না যে অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশন জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি ও সংগঠনগুলোকে প্রশ্রয় দেবে।’
উল্লেখ্য, আগামী ২৩ এবং ২৪ মার্চ মুসলিম দেশগুলোর এই সংগঠনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মিলিত হবেন পাকিস্তানে। সেই বৈঠকে পাকিস্তানের তরফ থেকে কাশ্মীর ইস্যু উত্থাপন করা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর এই কারণেই হুরিয়ত প্রধানকে এভাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, দাবি করেন ভারতের দূত।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বলেছেন, ‘ভারত সরকার এই ধরনের কার্যক্রমকে অত্যন্ত গুরুতর দৃষ্টিতে দেখছে। কারণ এর লক্ষ্য সরাসরি ভারতের ঐক্যকে নষ্ট করা এবং আমাদের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা লঙ্ঘণ করা। আমরা আশা করি না যে, ওআইসি সন্ত্রাসবাদ এবং ভারতবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত ব্যক্তি ও সংগঠনগুলোকে উৎসাহিত করবে।’
পাকিস্তানের নাম উল্লেখ না করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, ‘এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে ওআইসি অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে মনোযোগ দেয়ার পরিবর্তে একটি সদস্যভুক্ত দেশের রাজনৈতিক এজেন্ডা দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। আমরা বারবার ওআইসিকে বলেছি যাতে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য এই প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করা না হয়।’
উল্লেখ্য, সর্বদলীয় হুরিয়ত কনফারেন্স (এপিএইচসি) ১৯৯২ সালে গঠন করা হয়েছিল। মিরওয়াইজ উমর ফারুক এর প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন। এর সংবিধান কাশ্মীর সংকট সমাধানের জন্য ‘শান্তিপূর্ণ সংগ্রাম’ চালানোর কথা বলে।
অন্যদিকে, বিগত বেশ কয়েক বছরে ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক জোরদার হয়েছে। সৌদি আরব হোক কি সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাণিজ্যিক কারণে ভারতের সঙ্গে এই দেশগুলোর সম্পর্ক ভালো হয়েছে। পাশাপাশি, কাতার, কুয়েত, বাংলাদেশের মতো ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গেও ভারতের সম্পর্ক ভালো। শুধুমাত্র মালয়েশিয়া বারবার পাকিস্তানের সঙ্গে সুর মিলিয়ে কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতবিরোধী অবস্থান নিয়েছে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে ভারত চায় না যে দেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যু নিয়ে মুসলিম দেশগুলোর এই সংগঠন আলোচনা করুক এবং তাতে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা প্রশ্রয় পায়।