ইউক্রেনে রুশ হামলা চলছেই। জবাব দেয়ার চেষ্টা করছে ইউক্রেনও। সামরিক সহায়তা দিলেও ইউক্রেনে সেনা পাঠাতে অনিচ্ছুক ন্যাটো। তবে ন্যাটোভুক্ত দেশ পোল্যান্ড সীমান্তের কাছে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নড়েচড়ে বসেছে সংস্থাটি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেছেন, ন্যাটোর ভুখণ্ডে কোনো আঘাত আসলে সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে সংস্থাটি।
আরটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিবিএসের ‘ফেস দ্য নেশন’ প্রোগ্রামে সুলিভান বলেন, ‘পোল্যান্ডের স্থল ও আকাশসীমায় ইচ্ছাকৃত কিংবা অনিচ্ছাকৃত কোনো সামরিক পদক্ষেপ ন্যাটোর ওপর হামলা হিসেবে বিবেচিত হবে।’
তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটোর সীমানার প্রতি ইঞ্চি সুরক্ষার জন্য কাজ করে যাবে।
সুলিভান বলেন, ‘যদি ন্যাটো ভুখণ্ডে কোনো সামরিক হামলা হয়। আর্টিক্যাল ৫ মোতাবেক ন্যাটো তার সর্বশক্তি দিয়ে এর জবাব দেবে। এমনকি অনিচ্ছাকৃত সামরিক হামলার ক্ষেত্রেও।’
এদিকে ইউক্রেনে রুশ আক্রমণ চলছেই। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা ও সামরিক ক্ষয়ক্ষতি রাশিয়াকে টলাতে পারছে না। বরঞ্চ রাশিয়া ইউক্রেনজুড়ে আক্রমণের পরিধি বৃদ্ধি করছে। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলেও গতকাল হামলা চালিয়েছে রুশ সেনারা।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান
ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলে জাভোরিভ সামরিক ঘাঁটিতে রাশিয়া ৩০টি রকেট নিক্ষেপ করে। এ হামলায় ৩৫ জন মারা গেছেন এবং আহত হয়েছেন ১৩৪ জন।
রুশ হামলার শিকার জাভোরিভ সামরিক ঘাঁটি পোল্যান্ড সীমান্ত থেকে মাত্র ১৫ মাইল (২৫ কিলোমিটার) দূরে অবস্থিত। একসময়ের সোভিয়েতভুক্ত দেশ পোল্যান্ড বর্তমানে ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য। দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর ঘাঁটি রয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি হামলার দিনটিকে ‘কালো দিন’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘পশ্চিমা নেতাদের কাছে রাশিয়ার এই হামলা একটি পরিষ্কার সতর্কবার্তা যে ন্যাটো এলাকায় রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত কেবল সময়ের ব্যাপার মাত্র।’
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ অভিযান।
ইউক্রেনকে ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’ এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে। এরই মধ্যে প্রায় ২৭ লাখ মানুষ ইউক্রেন ছেড়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে।