ফারাক্কা বাঁধের কারণে প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার রাজ্যের ক্ষতির পরিমাণের হিসাব দিয়ে নদী ভাঙন রুখতে তিনি এই চিঠি পাঠান।
ফারাক্কা বাঁধের কারণ দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে নদী পাড়ের মানুষেরা। ভাঙন রুখতে ফারাক্কা বাঁধ কর্তৃপক্ষ কার্যত কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
এমন প্রেক্ষাপটে মোদিকে পাঠানো চিঠিতে মমতা লিখেছেন, গত ১৫ বছরে নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে ২ হাজার ৮ শ হেক্টর উর্বর জমি। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
চিঠিতে রাজ্যের মালদা, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া জেলার নদী ভাঙনকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার কথা বলা হয়। এজন্য নদীর গতিপথ বদলকে দায়ী করে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের প্রভাব নদীর গতিপথে পড়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।
২০০৫ সালে ভারতের জল সম্পদ মন্ত্রণালয় ফারাক্কা বাঁধ কর্তৃপক্ষের হাতে নদীর ভাঙন রোধে অতিরিক্ত ক্ষমতা তুলে দেয়। কিন্তু ২০১৭ সালে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার রাজ্যের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করে একতরফাভাবে বাঁধ কর্তৃপক্ষের সেই বিশেষ ক্ষমতায় বদল ঘটায়।
তখনই মুখ্যমন্ত্রী চিঠি লিখে এর প্রতিবাদ করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন নদী ভাঙন রোধে বাঁধ কর্তৃপক্ষকেই দায়িত্ব নিতে হবে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।
এমন পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাজ্যের হাজার হাজার সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে বর্ষাকালে নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে জমি-জিরেত বাস্তুভিটে উর্বর চাষের জমি।
চিঠিতে মোদিকে মমতা জানিয়েছেন, নদীর ভাঙন রোধ করা অত্যন্ত জরুরি কিন্তু রাজ্য সরকারের পক্ষে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ জোগান দেয়া সম্ভব নয়। তাই এসব জেলার ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের দুর্দশার কথা ভেবে এ ব্যাপারে মমতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।