রাশিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে রুশ অধ্যুষিত ইউক্রেনের দুটি অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুগানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পূর্ব ইউক্রেনে ‘শান্তি বজায় রাখতে’ সেনা পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রাশিয়ার এ কর্মকাণ্ডে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র বলছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের ঘোষণাটি ‘ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার বিনা প্ররোচনায় লঙ্ঘন’ এবং এ ঘটনায় জাতিসংঘ ইউক্রেনের জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের ডাককেও সমর্থন করেছে দেশটি।
ইউক্রেনের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় ইতোমধ্যে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক চলছে।
পশ্চিমা দেশগুলো বেশ আগে থেকেই মস্কোকে সতর্ক করে আসছে, যাতে তারা দোনেৎস্ক ও লুগানস্ককে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি না দেয়। তবে কয়েক ঘণ্টা আগেই পুতিন অঞ্চল দুটিকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং শান্তি রক্ষার্থে সেখানে সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে। রাশিয়া মনে করে, অঞ্চল দুটি ঐতিহাসিকভাবেই রাশিয়ার অংশ।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে দোনেৎস্কোর রাস্তায় ট্যাংক ছাড়াও ভারী সামরিক যান দেখা গেছে। এর আগে কখনো এমনটি দেখা যায়নি। এ সময় প্রায় পাঁচটি ট্যাংককে সারিবদ্ধভাবে দেখা গেছে।
এদিকে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি পশ্চিমা মিত্রদের রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘শক্তিশালী ও কার্যকর’ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে।
এর আগে সোমবার রাশিয়ার নিরাপত্তা কাউন্সিলের অনির্ধারিত এক বৈঠক শেষে ক্রেমলিন পূর্ব ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুগানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
পূর্ব ইউক্রেনের বিচ্ছিন্নতাবাদী দোনেৎস্ক ও লুগানস্ক অঞ্চলের বিদ্রোহী নেতারা পুতিনের কাছে তাদের স্বাধীন হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার আবেদন করার পর এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ফরাসি ও জার্মান রাষ্ট্রপ্রধানকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন পুতিন।
এর আগে ২০১৪ সালে ইউক্রেন থেকে ক্রিমিয়া ছিনিয়ে নিয়ে নিজেদের মূল ভূখণ্ডে যুক্ত করে রাশিয়া। সে সময় থেকেই পূর্ব ইউক্রেনে সংঘাত চলছে। ইউক্রেন সেনা ও মস্কো সমর্থিত বিদ্রোহীদের সংঘাতে এ পর্যন্ত ১৪ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন আরও কয়েক লাখ।