ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। বেলারুশের সঙ্গেও মহড়ার সময় বাড়িয়েছে দেশটি। এদিকে মস্কোপন্থি বিদ্রোহীদের সঙ্গে গোলা বিনিময় চলছে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর। এই ইস্যু সামনে রেখে যেকোনো সময় হামলা চালাতে পারে রাশিয়া, এমন আশঙ্কা যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের।
এবার আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর বেছে বেছে কিছু মানুষকে অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যা করতে পারে।
এদিকে ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নীতিগতভাবে সাক্ষাৎ করতে রাজি হয়েছেন।
এর আগে রোববার হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি জানিয়েছেন, ২৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন- পুতিন শিগগিরই ইউক্রেনে হামলা শুরু করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে এই বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা কমে যেতে পারে।
বিবৃতিতে সাকি বলেন, ‘আমরা (যুক্তরাষ্ট্র) সব সময় কূটনীতির জন্য প্রস্তুত। কূটনীতির পরিবর্তে রাশিয়া যুদ্ধ বেছে নিলে আমরা দ্রুত ও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করতে প্রস্তুত। বর্তমান প্রেক্ষাপটে রাশিয়া শিগগিরই ইউক্রেনের ওপর পূর্ণমাত্রার হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।’
ফ্রান্সের এলিসি প্যালেসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রস্তাবিত শীর্ষ সম্মেলনটি রোববার পুতিন ও বাইডেন দুই রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে দীর্ঘ ফোনালাপের সময় প্রেসিডেন্ট মাখোঁর পক্ষ থেকে প্রস্তাব করা হয়েছিল।
রাশিয়ার যুদ্ধপ্রস্তুতি ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমাগত নিষেধাজ্ঞার হুমকির পরও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলে আসছেন, যুদ্ধ ঠেকাতে যেকোনো পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র আলোচনায় প্রস্তুত।
এরই মধ্যে কিছু স্যাটেলাইট চিত্র উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, ইউক্রেন সীমান্তে বহু যুদ্ধবিমান জড়ো করেছে রাশিয়া।
সম্প্রতি ইউক্রেন ইস্যুতে দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার উত্তেজনা বাড়ছে। ন্যাটো যেমন পূর্ব ইউরোপে সেনাসংখ্যা বাড়াচ্ছে, রাশিয়াও তেমনি ইউক্রেন সীমান্তে সেনাসংখ্যা বাড়িয়েই চলছে।
এর আগে ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপত্যকা দখলে নেয় রাশিয়া। শুরু হয় ইউক্রেন সেনাবাহিনীর সঙ্গে মস্কোপন্থি ইউক্রেনীয় বিদ্রোহীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। এতে কমপক্ষে ১৪ হাজার মানুষ নিহত হন।