শক্তিশালী ঝড় ‘ইউনিস’ আঘাত হেনেছে যুক্তরাজ্যে; এতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালে কয়েক দশকের সবচেয়ে বড় এ ঝড় আঘাত হানার পর এই তিনজনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
উত্তর লন্ডনে গাছ উল্টে গাড়ির ওপর পড়ে মারা গেছেন ৩০ বছর বয়সী এক নারী। এছাড়া ৫০ বছর বয়সী আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে শরীরে ধ্বংসাবশেষের আঘাতে। আর একজন মারা গেছেন আয়ারল্যান্ডে।
আরও কিছু এলাকায় ঝড়ের তাণ্ডবের খবর পাওয়া গেছে। ঝড়ের মধ্যে অনেক এলাকায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বিদ্যুৎ সংযোগ। রাস্তায় পানি উঠে পড়েছে। ভীতিকর অবস্থা বিরাজ করছে।
ঝড়ের আভাস পেয়ে আগেই শত শত স্কুল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ওয়েলসের সব ট্রেনের শিডিউল বাতিল করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের সেনাবাহিনীকেও পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বিবিসি বলছে, লাখ লাখ মানুষকে তাদের ঘরে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে কমপক্ষে ৬৫টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। সবমিলিয়ে ইউনিসের আঘাতে আয়ারল্যান্ডে ৫৫ হাজারেরও বেশি বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
অনেক এলাকাতেই এখন বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১০০ মাইল। ঝড়ের এমন তীব্র গতিতে কিছু এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্কতা বা রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, ইংল্যান্ডের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চল এবং ওয়েলসে এই রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। ইংল্যান্ডে গত এক দশকে চারবার এসরকম রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
দক্ষিণ ইংল্যান্ডের একটি দ্বীপ আইল অফ ওয়াইটের একটি স্থানে বাতাসের গতি ইতোমধ্যে ঘণ্টায় ১২২ মাইল রেকর্ড করা হয়েছে। উত্তর আয়ারল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ডের কোথাও কোথাও তুষারপাতের ব্যাপারেও সতর্ক করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যে এক সপ্তাহের মধ্যে এটি দ্বিতীয় ঝড়। এর আগে ডাডলি ঝড়ের আঘাতে স্কটল্যান্ড, উত্তর ইংল্যান্ড এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডে বহু বাড়ি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপড়ে গেছে বহু গাছপালা।
আবহাওয়া অফিস বলছে, ঝড় ইউনিস ডাডলির তীব্রতাকেও ছাড়িয়ে যাবে এবং এটি হবে গত তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১৯৯০ সালের জানুয়ারির ঝড়ে যে রকম ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল এবারেও সে রকম হতে পারে। ৩২ বছর আগের ওই ঝড়ে ৪৭ জনের প্রাণহানিসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।