কানাডার রাজধানী অটোয়ায় করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে সরকারের দেয়া বিধির বিরুদ্ধে তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া বিক্ষুব্ধদের গ্রেপ্তার অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।
স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালেও অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কেউ কেউ আত্মসমর্পণ করেছেন। বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। শান্তিপূর্ণ অভিযান চালানো হচ্ছে।
একজন বিক্ষোভকারী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘স্বাধীনতা ব্যাপারটি কখনই স্বাধীন নয়। কী-ই বা হবে যদি তারা আমাদের হাতে হাতকড়া পরায় কিংবা কারাগারে ঢুকিয়ে দেয়।’
গত জানুয়ারির মাঝামাঝি আন্তসীমান্ত ট্রাকচালকদের জন্য করোনার টিকাসংক্রান্ত আদেশ জারি করে জাস্টিন ট্রুডোর সরকার। ফলে টিকা না নেয়া ট্রাকচালকদের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে দেশে ফেরার পর প্রতিবারই কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। এ অবস্থায় ক্ষুব্ধ হয়ে ‘ফ্রিডম কনভয়’ নামের আন্দোলনে নামেন তারা।
শুক্রবারের অভিযানের আগে বৃহস্পতিবার এই আন্দোলনের দুজন নেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদিন রাজধানীর প্রধান জায়গাগুলোয় পুলিশি তল্লাশি চৌকি বসানো হয়। বাইরে থেকে কোনো আন্দোলনকারী যেন অটোয়ায় ঢুকতে না পারে সে পদক্ষেপও নেয় পুলিশ।
ট্রাকচালকদের আন্দোলনে বেশ কিছুদিন ধরে কানাডায় অস্থিরতা বিরাজ করছে। দেশটির সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ অন্টারিও। রাজধানী অটোয়া ও গুরুত্বপূর্ণ শহর টরন্টো এই অন্টারিওতে অবস্থিত।
বিক্ষুব্ধরা একপর্যায়ে কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার ব্যস্ততম সীমান্ত অটোয়া ও উইন্ডসর অ্যাম্বাসেডর ব্রিজ বন্ধের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। এতে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল পুরো অটোয়া। বন্ধ হয়ে পড়ে প্রতিবেশী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জরুরি পণ্যের আমদানি-রপ্তানিও।
এমন প্রেক্ষাপটে গত ৭ ফেব্রুয়ারি প্রথমে অটোয়ায় জরুরি অবস্থা জারি করে ফেডারেল সরকার। এরপর ১১ ফেব্রুয়ারি জরুরি অবস্থা জারি করা হয় অন্টারিওজুড়ে। এর পরই পুলিশ ওই এলাকায় অভিযানে নামে।
প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ জনসংখ্যার দেশ কানাডার ১০টি প্রদেশ ও তিনটি অঞ্চলের মধ্যে শুধু অন্টারিওতে ১ কোটি ৪০ লাখের বেশি মানুষ বসবাস করে। কানাডায় বাংলাদেশি হাইকমিশনের তথ্যমতে, উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে কমপক্ষে এক লাখ বাংলাদেশি স্থায়ীভাবে পাড়ি জমিয়েছেন।