কানাডায় করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের অন্টারিওর উইন্ডসর অ্যাম্বাসেডর ব্রিজ থেকে সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
গত কয়েক দিন ধরে কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার ব্যস্ততম সীমান্ত অটোয়া ও উইন্ডসর অ্যাম্বাসেডর ব্রিজ বন্ধের দাবিতে আন্দোলন করছেন দেশটির ট্রাকচালকরা।
এতে কার্যত অচল ও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে রাজধানী অটোয়া। বন্ধ হয়ে পড়েছে প্রতিবেশী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জরুরি পণ্যের আমদানি-রপ্তানিও।
কানাডার সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার জানায়, এমন প্রেক্ষাপটে স্থানীয় সময় রোববার পুলিশ ওই এলাকায় অভিযানে নামে। সকাল ৯টার দিকে হুরুন চার্চ রোড ও অ্যাম্বাসেডর ব্রিজ থেকে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেয় পুলিশ।
এ সময় কেউ বিক্ষোভ করলে তাকে গ্রেপ্তারের ঘোষণা দেয় পুলিশ। গাড়িগুলোকে জব্দের কথা বলা হয়। এর পর বিক্ষুব্ধদের দু-একজনকে ব্রিজ থেকে কিছুটা দূরে অবস্থান করতে দেখা যায়।
উইন্ডসর পুলিশের সার্জেন্ট স্টিভ বেটারিজ বলেন, ‘সংকট দ্রুত সমাধান করা যায়নি। তবে এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। আমরা চাইনি, কেউ আহত হোক।’
রোববারের মধ্যেই পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
কানাডার সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ অন্টারিও। দেশটির রাজধানী অটোয়া ও গুরুত্বপূর্ণ শহর টরন্টো এই অন্টারিওতে অবস্থিত। ট্রাকচালকদের বিক্ষোভে গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানী অটোয়াতে জরুরি অবস্থা জারি করে ফেডারেল সরকার। এরপর ১১ ফেব্রুয়ারি জরুরি অবস্থা জারি করা হয় অন্টারিওজুড়ে।
ট্রাকচালকদের বিক্ষোভ দমাতে ব্যর্থ হওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েন অন্টারিওর প্রাদেশিক প্রধানমন্ত্রী ডগ ফোর্ড। শুক্রবার এক প্রেস কনফারেন্সে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সীমান্ত ক্রসিং, বিমানবন্দর, বন্দর এবং প্রধান মহাসড়কে পণ্য, মানুষ এবং পরিষেবার চলাচলে বাধা সৃষ্টিকারী যে কেউ আইনের আওতায় আসবেন।’
ওই দিন ডগ ফোর্ড বলেন, ‘অটোয়া কার্যত অচল। এটা আর এখন আন্দোলনের রূপে নেই; রাজধানী দখলদারীদের কবলে চলে গেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে গোটা প্রদেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হলো।’
গত জানুয়ারির মাঝামাঝি আন্তসীমান্ত ট্রাকচালকদের জন্য করোনার টিকাসংক্রান্ত আদেশ জারি করে জাস্টিন ট্রুডোর সরকার। ফলে টিকা না নেয়া ট্রাকচালকদের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে দেশে ফেরার পর প্রতিবারই কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। এ অবস্থায় ক্ষুব্ধ হয়ে ‘ফ্রিডম কনভয়’ নামের আন্দোলনে নামেন তারা।
প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ জনসংখ্যার দেশ কানাডার ১০টি প্রদেশ ও তিনটি অঞ্চলের মধ্যে শুধু অন্টারিওতে ১ কোটি ৪০ লাখের বেশি মানুষ বসবাস করে। কানাডায় বাংলাদেশি হাইকমিশনের তথ্য মতে, উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে কমপক্ষে এক লাখ বাংলাদেশি স্থায়ীভাবে পাড়ি জমিয়েছেন।