বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কুরায়শি নয়, ছবিটি বাগদাদির

  •    
  • ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৬:২৭

যে বাড়িতে হামলা চালিয়ে আইএস প্রধান আবু ইব্রাহিম আল-হাশিমি আল-কুরায়শিকে হত্যা করা হয় বলে দাবি করা হয়েছে, অনেকেই সেই বাড়ির সঙ্গে ছবি এবং কুরায়শির ছবি আপলোড করেছেন। এতে দেখা যায়, দাড়িওয়ালা মধ্যবয়স্ক ব্যক্তিটির মাথায় স্কার্ফ, পরনে জ্যাকেট।

সিরিয়ার উত্তর-পূর্বের হাসাকাহ শহরের ঘোয়ারিয়ান কারাগারে চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি হামলা চালায় আইএস। উদ্দেশ্য, কারাগারটিতে বন্দি তিন হাজারের বেশি আইএস কমান্ডারকে ছাড়িয়ে নেয়া।

আইএসকে রুখতে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলে সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (এসডিএফ)। তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসে আমেরিকা ও যুক্তরাজ্য। বিরামহীন বিমান হামলায় কোণঠাসা করে ফেলে হামলাকারীদের।

অবশেষে কারাগারের নিয়ন্ত্রণ নেয় এসডিএফ। ১০ দিনের লড়াই শেষে এসডিএফের ১২১ সদস্য ও ৩৭৪ আইএস যোদ্ধা নিহত হন। এ লড়াইয়ে চার বেসামরিক নাগরিকও প্রাণ হারান বলে জানায় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম

আইএসের হামলার পর অভিযান জোরদার করে পশ্চিমা জোট। সিরিয়া-তুরস্কের সীমান্তের কাছে আতমেহ এলাকায় ২ ফেব্রুয়ারি অভিযান চালায় আমেরিকা।

অভিযান শেষে ওয়াশিংটন জানায়, হামলায় আইএসের বর্তমান প্রধান আবু ইব্রাহিম আল-হাশিমি আল-কুরায়শি নিহত হয়েছেন। ছবিসহ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে খবরটি ফলাও করে প্রচার করে।

আইএস প্রতিষ্ঠাতা আবু বকর আল-বাগদাদি ২০১৯ সালে নিহত হওয়ার পর থেকে কুরায়শি সংগঠনটির দায়িত্বে ছিলেন।

এই মৃত্যুর খবর টুইটারে ব্যাপক আলোচিত হয়। যে বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে, অনেকেই সেই বাড়ির সঙ্গে ছবি এবং কুরায়শির ছবি আপলোড করেছেন। এতে দেখা যায়, দাড়িওয়ালা মধ্যবয়স্ক ব্যক্তিটির মাথায় স্কার্ফ, পরনে জ্যাকেট।

তবে ইন্ডিয়া টুডের অ্যান্টি ফেক নিউজ ওয়ার রুম (এএফডব্লিউএ) বলছে, টুইটে প্রকাশিত ছবিটি ভুয়া। এটি আইএস প্রতিষ্ঠাতা আবু বকর আল-বাগদাদির পুরোনো একটি ছবি।

এএফডব্লিউএ যেভাবে নিশ্চিত হলো

আব্দুল্লাহ কারদেশ ও আমির মোহাম্মদ নামেও পরিচিত আবু ইব্রাহিম আল-হাশিমি আল-কুরায়শি। এতমেহ শহরের যে ভবনে তিনি থাকতেন, সেটি ছিল তিনতলা। পরিবার নিয়ে কুরায়শি থাকতেন দোতলায়।

পেন্টাগন বলছে, বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা বিবেচনায় তারা বোমা হামলার বদলে স্থল অভিযানের পরিকল্পনা বেছে নেয়। আস্তানার খবর পেয়ে যাওয়ায় পরিবারসহ আত্মহত্যা করেন ৪৬ বছরের কুরায়শি; তিন বছর আগে একই কাজ করেছিলেন তার পূর্বসূরি বাগদাদি।

এএফডব্লিউএ বলছে, সংবাদ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুরায়শির মৃত্যুর পর যে ছবি প্রকাশ হয়েছে, সেটির সঙ্গে কুরায়শির আগের ছবির সঙ্গে অমিল পেয়েছে তারা। ছড়িয়ে পড়া ছবিতে টাক মাথার দাড়ি কামানো এক ব্যক্তিকে বলা হচ্ছে আইএস নেতা কুরায়শি।

এই সূত্র ধরে আরও অনুসন্ধান চালানো হয়। ইন্টারনেটে ঘেঁটে দেখা যায়, ছবিটির সঙ্গে আইএসের সম্পৃক্ততা আছে। তবে সেসব ২০১৯ সালের।

এর মধ্যে সিএনবিসির প্রতিবেদন যেটি ২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর প্রকাশিত হয়েছিল, সেখানে তৎকালীন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প আইএস প্রধান আবু বকর আল বাগদাদির নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ওই প্রতিবেদনের ভেতর যে ছবি ব্যবহার হয়েছে, তার সঙ্গে কুরায়শির যে ছবি এখন ছড়িয়ে পড়েছে সেটি মিলে গেছে।

আরও অনুসন্ধানে জানা যায়, এই একই ছবি আল-বাগদাদির ক্ষেত্রে একাধিক সংবাদমাধ্যমে ব্যবহার হয়েছিল। এএফপি এবং গেটি ইমেজেও বাগদাদির নামে অনুসন্ধান করলে চলে আসে একই ছবি। ডিপার্টমেন্ট অফ ডিফেন্স বাগদাদির একটি তারিখবিহীন ছবি প্রকাশ করেছিল। স্থানও অনির্দিষ্ট।

এ ক্ষেত্রে এএফপি আরও এগিয়ে। আইএস প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদির একটি ভিডিও গত ২৯ এপ্রিল প্রকাশ করে আইএস। তবে ভিডিওটি কবে ধারণ হয়েছিল, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ভিডিওতে বাগদাদির বক্তব্যে অতীতের কথা উল্লেখ করতে শোনা যায়। পূর্ব সিরিয়ায় আইএসের চূড়ান্ত ঘাঁটি বাঘৌজের টেকাতে মাসব্যাপী লড়াই নিয়ে কথা বলেছিলেন তিনি। এএফপির ক্যাপশনে এটিই লেখা ছিল।

সব মিলিয়ে স্পষ্ট, আইএসের নিহত নেতা আবু ইব্রাহিম আল-হাশিমি আল-কুরায়শির যে ছবিটি ব্যবহার হচ্ছে আদতে এটি তার পূর্বসূরি আবু বকর আল-বাগদাদির।

এ বিভাগের আরো খবর