করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলা আন্দোলন দমাতে এবার কানাডার সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ অন্টারিওতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
দেশটির রাজধানী অটোয়া ও গুরুত্বপূর্ণ শহর টরন্টো এই অন্টারিওতে অবস্থিত। গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানী অটোয়াতে জরুরি অবস্থা জারি করে ফেডারেল সরকার।
স্থানীয় সময় শুক্রবার অন্টারিওজুড়ে জরুরি অবস্থার ঘোষণা দেয়া হয় বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার ব্যস্ততম সীমান্ত অটোয়া ও উইন্ডসর অ্যাম্বাসেডর ব্রিজ বন্ধের দাবিতে আন্দোলন করছেন কানাডার ট্রাকচালকেরা। এমন প্রেক্ষাপটে কার্যত অচল ও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে রাজধানী অটোয়া। বন্ধ হয়ে পড়েছে প্রতিবেশী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জরুরি পণ্যের আমদানি-রপ্তানি।
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় অটোয়াতে জরুরি অবস্থার পর এবার অন্টারিওতেও একই পদক্ষেপ নিল কর্তৃপক্ষ।
ট্রাকচালকদের বিক্ষোভ দমাতে ব্যর্থ হওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন অন্টারিওর প্রাদেশিক প্রধানমন্ত্রী ডগ ফোর্ড। শুক্রবার এক প্রেস কনফারেন্সে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সীমান্ত ক্রসিং, বিমানবন্দর, বন্দর এবং প্রধান মহাসড়কে পণ্য, মানুষ এবং পরিষেবার চলাচলে বাধা সৃষ্টিকারী যে কেউ আইনের আওতায় আসবেন।’
ডগ ফোর্ড বলেন, ‘অটোয়া কার্যত অচল। এটা আর এখন আন্দোলনের রূপে নেই; রাজধানী দখলদারীদের কবলে চলে গেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে গোটা প্রদেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হলো।’
আন্দোলনে কার্যত অচল অন্টারিও। ছবি: দ্য স্টার
গত জানুয়ারির মাঝামাঝি আন্তসীমান্ত ট্রাকচালকদের জন্য করোনার টিকাসংক্রান্ত আদেশ জারি করে জাস্ট্রিন ট্রুডোর সরকার।
এর ফলে টিকা না নেয়া ট্রাকচালকদের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে দেশে ফেরার পর প্রতিবারই কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। এ অবস্থায় ক্ষুব্ধ হয়ে ‘ফ্রিডম কনভয়’ নামের আন্দোলনে নামেন তারা।
অন্টারিও কর্তৃপক্ষ জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দিয়ে বলেছে, আইন না মানলে তাকে এক বছর পর্যন্ত কারাগারে থাকতে হতে পারে। একই সঙ্গে জরিমানা গুনতে হবে সর্বোচ্চ এক লাখ ডলার।
এর আগে করোনার বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে ট্রাকচালকদের চলমান আন্দোলনের জেরে গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানী অটোয়াতেও জরুরি অবস্থা জারি করে সরকার। রাজধানী শহর অটোয়ার মেয়র জিম ওয়াটসন ওই ঘোষণা দেন।
জরুরি অবস্থার ঘোষণা দিয়ে মেয়র ওইদিন বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। আন্দোলনকারীদের জন্য শহরবাসীর সুরক্ষা ও নিরাপত্তা হুমকিতে পড়েছে।
প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ জনসংখ্যার দেশ কানাডার ১০টি প্রদেশ ও তিনটি অঞ্চলের মধ্যে কেবল অন্টারিওতে ১ কোটি ৪০ লাখের বেশি মানুষ বসবাস করে।
কানাডায় বাংলাদেশি হাইকমিশনের তথ্যমতে, উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে কমপক্ষে এক লাখ বাংলাদেশি স্থায়ীভাবে পাড়ি জমিয়েছেন।