ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার মুসলিম নারীদের জন্য দেশে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরে একটি নির্বাচনী সমাবেশে বৃহস্পতিবার এক বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘তিন তালাক প্রথা নিষিদ্ধ করে বিজেপি সরকার মুসলিম নারীদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করেছে।
‘কিন্তু বিরোধী দলগুলো যখন আমাদের মুসলিম বোনদের মোদির প্রশংসা করতে দেখে, তখন তাদের মনে হয় ওই নারীদের থামাতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘মুসলিম নারীদের থামাতে, তারা তাদের অধিকার এবং আকাঙ্ক্ষার পথে বাধা তৈরি করতে নতুন উপায় নিয়ে আসে বিরোধীরা।’
মোদি বলেন, ‘সরকার মুসলিম নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রতিরোধে ধারাবাহিকভাবে কাজ করেছে। অন্যদিকে, বিরোধী দলগুলো ভোটের স্বার্থে মুসলিম নারীদের অগ্রগতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যদিও বিজেপি সরকার ভুক্তভোগী প্রতিটি মুসলিম নারীর পাশে দাঁড়িয়েছে, বিরোধীরা তাদের বিভ্রান্ত করছে।’
তিনি বলেন, ‘ওই লোকেরা মুসলিম বোনদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন, যাতে মুসলিম কন্যাদের জীবন সবসময় পেছনে থাকে।’
মোদি বলেন, ‘২০১৩ সালের মুজাফফরনগর দাঙ্গার পাশাপাশি ২০১৭ সালে সাহরানপুরে সহিংসতা, কিভাবে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় লোকজনকে লক্ষ্যবস্তু করা হয় তার প্রমাণ।’
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের প্রতিক্রিয়ায় সমাজবাদী পার্টির এক শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেছেন, ‘২০০২ সালে গুজরাট নরসংহার নরেন্দ্র মোদি ভুলে গেলেন? তার শাসনেই আমেদাবাদে দাঙ্গা চলাকালীন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী ছিল না পথে ঘাটে। বিজেপির নেতারা দাঙ্গায় নেতৃত্ব দিয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘২০১৭ সালে মুজাফফরনগর দাঙ্গায় মদদ দিয়েছিলেন সেখানকার বিজেপি নেতারা। ২০২০ সালে দিল্লি দাঙ্গা হয়েছে বিজেপি নেতাদের প্রত্যক্ষ উসকানিতে। দিল্লিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায় তো কেন্দ্রীয় সরকারের।’
উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। মোট ৭ দফায় ভোটগ্রহণ হবে ভারতের সবচেয়ে এ বড় রাজ্যে।
এমন পরিস্থিতিতে দক্ষিণী রাজ্য কর্ণাটক উত্তাল হিজাব বিতর্কে। বিতর্কের সূত্রপাত জেলা সদর উদুপি শহরে সরকারি পিইউ কলেজে হিজাব পরা মেয়েদের ক্লাস থেকে বাদ দেওয়া নিয়ে।
কেন মুসলিম ছাত্রীরা হিজাব পরে স্কুল-কলেজে আসছে, তা নিয়ে মাসখানেক ধরে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। কেন মুসলিম সহপাঠীরা হিজাব পরে আসবে, তার প্রতিবাদে গেরুয়া চাদর গায়ে স্কুল বা কলেজে এসেছে অন্য পড়ুয়ারাও।
উত্তেজনার পারদ যখন চড়তে থাকে, হিজাব পরে আসা ছাত্রীদের স্কুলে বা কলেজে ঢুকতে দেওয়া হলেও অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন করে আলাদা ক্লাসঘরে বসানো হয়। দুটি স্কুলে আবার সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা এড়াতে হিজাব পরে আসা ছাত্রীদের ছুটি দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
বিতর্ক বাড়তেই থাকলে কর্ণাটক সরকার হিজাব বা ওই-জাতীয় কাপড় পরে স্কুলে বা কলেজে আসায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে স্কুলগুলো।