বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সংক্রমণেই হচ্ছে ৮৫ শতাংশ হাতির মৃত্যু

  •    
  • ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১০:৪৫

কেটি জানান, এই ভাইরাসে আক্রান্ত হাতিগুলো সাধারণত ১৮ মাস থেকে ৩ বছর বয়সী হয়। এতে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ হচ্ছে অলসতা ও মুখে ক্ষত। সাধারণত লক্ষণ দেখা দিতেই অনেক দেরি হয়ে যায়।

হাতি লালনপালনকারী কেটি মরিসন, হাসতে হাসতেই একটি পাঁচ বছর বয়সী হাতির বাচ্চার দিকে দেখিয়ে বলেন, ‘সে আমাদের আশ্চর্য বাচ্চা।’ মূলত ইউরোপের চিড়িয়াখানাগুলোর বাচ্চা হাতিগুলো এমন আদূরে ডাক শুনেই অভ্যস্ত।

কেটির দেখানো হাতিটির নাম ইন্দালি। সে একটি ভয়ংকর মারণঘাতী ভাইরাসের আক্রমণ থেকে সেরে উঠেছে, যে ভাইরাসের আক্রমণে গত ১০ বছরে শুধু চেস্টারের চিরিয়াখানাতেই ১০টি হাতি শাবক মারা গেছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভাইরাসজনিত এই রোগটির নাম এলিফ্যান্ট এন্ডোথিলিওট্রপিক হার্পস ভাইরাস (ইইএইচভি), যার কারণে মৃত্যুর হার ৮৫ শতাংশ। হাতিকে সংক্রমিত করা ভাইরাসের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বিপজ্জনক। চেস্টারের সিনিয়র কিউরেটর মাইক জর্ডান বলেন, এমন ভাইরাস একটি প্রজাতির বিলুপ্তির কারণ হতে পারে।

কেটি জানান, এই ভাইরাসে আক্রান্ত হাতিগুলো সাধারণত ১৮ মাস থেকে ৩ বছর বয়সী হয়। এতে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ হচ্ছে অলসতা ও মুখে ক্ষত। সাধারণত লক্ষণ দেখা দিতেই অনেক দেরি হয়ে যায়।

ইইএইচভি ভাইরাসটি ১৯৯০ সালে শনাক্ত হয়, পরবর্তী সময়ে ওয়াশিংটন ডিসির স্মিথ সোনিয়ান জু-এর গবেষকরা ১৯৯৯ সালে এর বৈশিষ্ট্য লিপিবদ্ধ করেন।

ভাইরাসটি আবিষ্কারের পর থেকে চিড়িয়াখানাগুলো যেনো দুঃস্বপ্নের দিন পার করছে। বার্লিনের পশুচিকিৎসা বিজ্ঞানী সোনিয়া জেসাস ফন্টেস ও তার সহকর্মীদের করা একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৮৫ সাল থেকে শুধু ইউরোপীয় চিড়িয়াখানাগুলোতেই ৫২ শতাংশ এশিয়ান হাতির মৃত্যুর জন্য দায়ী এই ভাইরাস। এ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের চিড়িয়াখানাগুলোতে ১৯৮০ সালের পর থেকে ৫০ শতাংশ হাতির মৃত্যু হয়েছে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে।

হাতিদের জন্য বিপজ্জনক ইইএইচভি নিয়ে গবেষণা করছেন সারাবিশ্বের গবেষকরা। তবে এ ক্ষেত্রে চেস্টার চিড়িয়াখানা বেশ এগিয়ে। তারা শিগগিরই এই ভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাকসিনের ট্রায়াল দেবেন। এই ভ্যাকসিন ট্রায়ালের পেছনের প্রধান বিজ্ঞানী ফালকো স্টেইনব্যাচ বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই জানি, সংক্রমণ রোগ প্রতিরোধ করা প্রায় অসম্ভব- আমরা ভাইরাসের আক্রান্তের ফলে সৃষ্ট গুরুতর অসুস্থতা ও মৃত্যু ঠেকাতে কাজ করছি।’

ভাইরাসটি কিভাবে প্রাণঘাতী রোগের সৃষ্টি করে, সে সম্পর্কে অনেক কিছুই এখনও অজানা। ধারণা করা হচ্ছে, এটি কোনো এক বয়স্ক হাতি থেকেই বাচ্চা হাতির শরীরে সংক্রমিত হয়েছে।

যখন একটি বাচ্চা হাতির মায়ের দুধ ছাড়ানো হয় বা মায়ের দুধের এন্টিবডি কমে যায়- এ পর্যায়ে বাছুরের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থা ভাইরাসকে মোকাবিলা করতে সক্ষম হয় না।

আমাদের লক্ষ্য সংক্রমণের আগেই হাতির রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে ভাইরাসটি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দেয়া। এমনটাই বলেছেন স্টেইনব্যাচ।

তবে এই ভাইরাস নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়টি এত সহজ নয়। বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়ে বিজ্ঞানীদের হাতির ওপরই নির্ভর করতে হয়। তাই চিড়িয়াখানার কর্মীরা খাবারের বিনিময়ে হাতিদের সঙ্গে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক করে নিয়েছেন। ফলে নমুনা সংগ্রহ অনেকটাই সহজ হয়েছে।

স্টেইনব্যাচ আশাবাদী যে পাঁচ বছরের মধ্যে এই ভ্যাকসিনের ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ হবে। ফলে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস থেকে রক্ষা পাবে হাতির প্রজাতি।

এ বিভাগের আরো খবর