ভারতের আলিপুরদুয়ার বক্সার পাহাড়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাসিন্দাদের মূল সমস্যা হলো উচ্চতা। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৬ হাজার ফুট ওপরে কেউ অসুস্থ হলে বা কোনো গর্ভবতী নারীকে চিকিৎসার জন্য সমতলে নামিয়ে আনা কষ্টসাধ্য ও বিপজ্জনক। তাই এখানকার বাসিন্দাদের সমস্যা সমাধানে পালকি অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু করেছে জেলা প্রশাসন।
আলিপুরদুয়ারের জেলা প্রশাসক সুরেন্দ্র মীনা বলেন, 'মানুষের অসুবিধার কথা ভেবে আমরা একটি পালকি অ্যাম্বুলেন্স পরীক্ষামূলকভাবে চালু করি। সেটা মানুষের কাজে আসায় আমরা বক্সার প্রত্যন্ত এলাকার জন্য অন্তত ১টি করে পালকি অ্যাম্বুলেন্স চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শিগগিরই ৮টি পালকি অ্যাম্বুলেন্স চালু হবে।'
আলিপুরদুয়ারের কালচিনি ব্লকের বক্সার পাহাড়ের ওপর ১১টি গ্রাম রয়েছে। উচ্চতার জন্য অসুস্থ রোগী বা গর্ভবতী নারীদের সমতলের নামিয়ে এনে চিকিৎসা করানো খুবই সমস্যা সেখানে।
এত দিন বাঁশের মাচায় করে রোগীদের সমতলে নামিয়ে আনত স্থানীয়রা ও পরিবারের লোকেরা। পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে বাঁশের মাচায় রোগী নিয়ে নামা বিপজ্জনক, প্রায়ই ঝুঁকির মুখে পড়েন সেখানকার বাসিন্দারা। এমনকি সেখানে দুর্ঘটনাও ঘটেছে।
পাহাড়ের উচ্চতায় বসবাসকারী এসব মানুষের দুর্ভোগ দূর করতে জেলা প্রশাসনের স্বাস্থ্য দপ্তর ও ফ্যামিলি প্লানিং অফ ইন্ডিয়া যৌথ উদ্যোগে পালকি অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু করেছে।
বক্সার ডারাগাওয়ের গ্রামের বাসিন্দা সন্তানসম্ভবা পাশালহাম ডুকপার প্রসব যন্ত্রণা উঠলে পালকি অ্যাম্বুলেন্সে তাকে কালচিনি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আনা হয়। সেখান থেকে তাকে সেই পালকি অ্যাম্বুলেন্সে আলিপুরদুয়ার হাসপাতালে নামিয়ে আনা হয়। সেখানে ১৪ জানুয়ারি এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন পাশালহাম ডুকপা।
পাশালহামের স্বামী ওয়াঙ্গেল ডুকপা জানান, পাশালহামই বক্সা পাহাড়ের প্রথম নারী, যাকে গর্ভবতী অবস্থায় পালকি অ্যাম্বুলেন্সে সমতলে নামিয়ে আনা হয়।