কাজাখস্তানে সরকারবিরোধী আন্দোলনে সহিংসতায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১৬৪ জন নিহত হয়েছেন। বিক্ষোভকারীদের দমাতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। চলছে ব্যাপক ধরপাকড়।
অভিযানে সবমিলিয়ে ৭ হাজার ৯৩৯ জনকে আটক করা হয়েছে বলে দেশটির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবা সংস্থা রয়টার্স।
জ্বালানির দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে গত ২ জানুয়ারি বিক্ষোভ শুরু হয় কাজাখস্তানে। পরে আরও কিছু দাবি আন্দোলনে যুক্ত হয়। একপর্যায়ে তা রূপ নেয় সহিংসতায়।
বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী আসকার মামিন। দেশজুড়ে জারি হয় দুই সপ্তাহের জরুরি অবস্থা। এতেও দমানো যায়নি বিক্ষুব্ধদের। এমন পরিস্থিতিতে আলমাতি শহরে চালানো হয়েছে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ।
বলা হচ্ছে, ১৯৯১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর এমন পরিস্থিতি দেখেনি দেশটির জনগণ।
কাজাখস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার পর্যন্ত আটক হয়েছেন ৭ হাজার ৯৩৯ জন। প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, সহিংসতার ঘটনায় আটক ব্যক্তিদের মধ্য উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিদেশিও রয়েছেন।
বিক্ষোভ দমাতে দেশজুড়ে বড় পরিসরে অভিযানে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রাজধানী নুর সুলতানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়েরলান টুরগুমবায়েভ জানিয়েছেন, অবস্থা স্থিতিশীল। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আভিযান চালানো হচ্ছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শতাধিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংকে হামলা ও লুটপাট হয়েছে। চার শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত ১৭৫ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে।
কাজাখস্তানের মূল শহর আলমাতিতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। এই শহরে মারা গেছেন ১০৩ জন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
উদ্ভূত পরিস্থিতে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত কয়েকটি দেশের সামরিক জোট কালেক্টিভ সিকিউরিটি ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (সিএসটিও) সহায়তা চান কাজাখস্তান প্রেসিডেন্ট। রাশিয়ার নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার সেনা নামে দেশে।
তারা জানায়, দেশের অবকাঠামো রক্ষায় যতদিন কাজাখস্তান সরকার চাইবে, ততদিন সে দেশে তাদের উপস্থিতি থাকবে। আর বিক্ষোভকারীদের প্রশিক্ষিত সন্ত্রাসী অ্যাখ্য দিয়ে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট তোকায়েভ।