বিক্ষোভ দমাতে দেশজুড়ে বড় পরিসরে অভিযানে কাজাখস্তান সরকার। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, গত এক সপ্তাহে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৬০ জন নিহত হয়েছেন। আটক হয়েছেন পাঁচ হাজার মানুষ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে আল জাজিরার প্রতিবেদনে রোববার বলা হয়েছে, শতাধিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংকে হামলা ও লুটপাট হয়েছে। চার শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত ১৭৫ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, কাজাখস্তানের মূল শহর আলমাতিতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। এই শহরে মারা গেছেন ১০৩ জন।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এরলান তুরগুম্বায়েভ বলেন, ‘পুরো দেশের পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় অভিযান অব্যাহত আছে।’
তবে সরকারের এই হিসাবের সঙ্গে একমত নন আল জাজিরার সাংবাদিক রবিন ফরেস্টিয়ার। প্রতিবেশী জর্জিয়ার রাজধানী তিবিলিস থেকে কাজাখস্তান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন তিনি।
ফরেস্টিয়ার বলেন, ‘মৃত্যু আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ৫ ও ৬ জানুয়ারি দিনভর ভারী মেশিনগানের গুলি এবং বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
‘সন্ত্রাস দমনে দেশটির সরকারের অভিযান চলছে। দেশের নিয়ন্ত্রণ পেতে বড় অভিযানে আছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।’
জ্বালানির দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে গত ২ জানুয়ারি বিক্ষোভ শুরু হয় কাজাখস্তানে। পরে আরও কিছু দাবি আন্দোলনে যুক্ত হয়। একপর্যায়ে তা রূপ নেয় সহিংসতায়। বলা হচ্ছে, ১৯৯১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর এমন পরিস্থিতি দেখেনি দেশটির জনগণ।
বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী আসকার মামিন। দেশজুড়ে জারি হয় দুই সপ্তাহের জরুরি অবস্থা।
এতেও দমানো যায়নি বিক্ষুব্ধদের। গত বুধ ও বৃহস্পতিবার আলমাতি শহরে চালানো হয় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ।
উদ্ভূত পরিস্থিতে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত কয়েকটি দেশের সামরিক জোট কালেক্টিভ সিকিউরিটি ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (সিএসটিও) সহায়তা চান কাজাখস্তান প্রেসিডেন্ট। রাশিয়ার নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার সেনারা নামে কাজাখস্তানে।
- আরও পড়ুন: উত্তপ্ত কাজাখস্তানে রুশ সেনা
তারা জানায়, দেশের অবকাঠামো রক্ষায় যতদিন কাজাখস্তান সরকার চাইবে, ততদিন সে দেশে তাদের উপস্থিতি থাকবে।
এতেই থেমে থাকেননি প্রেসিডেন্ট তোকায়েভ। বিক্ষোভকারীদের প্রশিক্ষিত সন্ত্রাসী অ্যাখ্য দিয়ে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।