উপন্যাসেই শুধু হানিবল লেকটাররা থাকে না। বাস্তব জগতেও এদের মাঝে মধ্যেই দেখা যায়। জার্মানিতে ঠিক এমন একজন ব্যক্তিকেই আজীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একজনকে হত্যা ও তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাটার অভিযোগ আনা হয়েছিল।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একজন সাবেক শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানুষখেকো (ক্যানিবালিজম) কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তাই শুক্রবার বার্লিনের একটি আদালত তাকে আজীবন কারাদণ্ড প্রদান করেছে।
বিচারক ম্যাথিয়াস সাটজ রায় ঘোষণার সময় ৪২ বছর বয়সী অভিযুক্ত স্টিফান আরের মানুষখেকো ফ্যান্টাসিকে খুবই অমানবিক হিসেবে অভিহিত করেছেন।
তিনি আরও বলেন, বিচারক হিসেবে ৩০ বছরের জীবনে এমন ঘটনা তিনি আর দেখেননি।
যখন রায় ঘোষণা হচ্ছিল, অভিযুক্ত স্টিফান আর. এ সময় নীরবে দাঁড়িয়েছিলেন।
প্রসিকিউটরের বরাতে জানা যায়, অভিযুক্ত স্টিফান তার ভিকটিমের সঙ্গে একটি ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ করেন। পরে তাকে নিজের বাসায় নিয়ে আসেন।
সেখানে আসার পর কৌশলে দেহ অবশ হয়ে যাওয়ার ওষুধ খাওয়ায়। ভিকটিম জ্ঞান হারিয়ে ফেললে খাওয়ার উদ্দেশ্যে তার যৌনাঙ্গ কেটে ফেলে।
পরে তাকে হত্যার পর পুরো মৃতদেহ টুকরা টুকরা করে জার্মানির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পানকৌ শহরে ছড়িয়ে দেয়।
এই মামলাটি প্রথম সামনে আসে ২০২০-এর নভেম্বরে। যখন স্টিফানের বাড়ির কাছেই একটি পার্কে মানুষের হাড় পাওয়া যায়।
পুলিশের তদন্ত বিভাগ বের করতে সক্ষম হয় যে হাড়টি বারলাইনার নামের একজন ব্যক্তির।
পরবর্তী সময়ে নিহত ব্যক্তির ফোন রেকর্ড যাচাই করে অনুসন্ধানকারীরা হত্যাকারীর ঠিকানা বের করে ফেলে। সেখানে তারা রক্তের দাগ পায়। মৃতদেহ কাটাছেঁড়া করার যন্ত্রপাতিও পায়।
স্টিফান আরের আইনজীবী দাবি করেছিলেন ওই ব্যক্তি তার মক্কেলের বাড়িতে স্বাভাবিকভাবেই মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তী সময়ে লোকজন তার সমকামিতার বিষয়টি জানতে পারবে বিধায় তিনি ঘাবড়ে গিয়ে মৃতদেহ লুকিয়ে ফেলার চেষ্টা করেন।
কিন্তু বিচারক সার্টজ জানান, এই ধরনের দাবি বিশ্বাস করার মতো নয়। কারণ অণ্ডকোষ ও লিঙ্গ খুব সাবধানে কাটা হয়েছে। মানুষখেকোদের মধ্যে এই ধরনের আচার দেখা যায়।
এর আগেও জার্মানিতে আরমিন মিউইস নামের এক ব্যক্তিকে ক্যানিবালিজমের দায়ে ২০০৬ সালে আজীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। সংবাদমাধ্যমে ওই ব্যক্তিকে ‘রোটেনবার্গের মানুষখেকো’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।