সব ধরনের কাজে রাজ্যপাল নাক গলান বলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে নালিশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কলকাতা চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার হাসপাতালের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমনটি জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এর আগেও পশ্চিমবঙ্গে মুখোমুখি অবস্থানে চলে যান রাজ্যপাল ও তৃণমূল কংগ্রেস। গত ১৩ মে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় কোচবিহার সফরে গিয়ে তৃণমূল কংগে্রসের তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়েন।
তার এই সফর নিয়ে অবশ্য আগে থেকেই রাজ্যে ক্ষমতাসীন দলটির আপত্তি ছিল।
বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল কেন্দ্রীয় বাহিনীর হেলিকপ্টারে চড়ে ভোট পরবর্তী সহিংসতার ঘটনা খতিয়ে দেখতে বিভিন্ন এলাকায় যান। স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার পরিকল্পনাও তার ছিল। তার এই সফরের প্রতিবাদে কোচবিহারের জোড়পাটকিতে দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার লাগানো হয়। গোলকগঞ্জে কালো পতাকা দেখিয়েছেন তৃণমূলের কর্মীরা।
শুক্রবার কলকাতার নিউটাউনের চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার হাসপাতালের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসটির ভার্চুয়াল উদ্বোধন মঞ্চে উপস্থিত থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর জন্য এখানে এসেছি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফোন করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ইন্টারেস্ট নিয়ে উপস্থিত আছেন। কিন্তু আমি এখানে বলতে চাইব, এই ক্যাম্পাসের উদ্বোধন আমরা আগেই করে দিয়েছি। কোভিড যখন হল, তখন আমরা এর উদ্বোধন করে দিয়েছিলাম। তখন এই হাসপাতাল আমাদের কাজে এসেছে।’
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, ‘এই হাসপাতালের ২৫ শতাংশ খরচ আমরাও দিচ্ছি। রেকারিং খরচ-খরচা দিচ্ছে রাজ্য সরকার। ১১ একর জমি আমরা দিয়েছি।’
এরপর অভিযোগের সুরে তিনি বলেন, ‘মেডিক্যালের সিট আরও বাড়ানো উচিত। কিন্তু কোন কাজ করতে গেলে, রাজ্যপাল নাক গলান। জানেন না, প্রধানমন্ত্রীর কাজই হচ্ছে।’
১১ একর জায়গার ওপর ৪৬০ শয্যাবিশিষ্ট চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার হাসপাতালের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসটিতে অত্যাধুনিক চিকিৎসার সমস্ত রকম ব্যবস্থা থাকছে। চিকিৎসকদের থাকার জন্য আবাসন এবং রোগীর আত্মীয়দের থাকার জন্য অতিথি নিবাস। থাকছে ৭৫০ টি শয্যার ব্যবস্থা।
দীর্ঘদিন পর একই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মানসুখ মান্ডবীয়, বিরোধীদলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামানিক, সুভাষ সরকার, সাংসদ জন বার্লা।
অনুষ্ঠান শুরুর পর সঞ্চালক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তার বক্তব্য রাখার অনুরোধ করলে, তিনি শুরু থেকেই পরিসংখ্যান দিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ ক্ষেত্রে রাজ্যের অবস্থান তুলে ধরেন। এবং অভিযোগের সুরে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বলেন, ‘বুস্টার ডোজ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, খুব ভালো। কিন্তু দ্বিতীয় ডোজ সম্পূর্ণ না হলে, কিভাবে বুস্টার ডোজ দেবো। আগে রাজ্য পর্যাপ্ত দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন পাক। ১০০ শতাংশ টিকাকরণ সম্পূর্ণ হোক। তারপর বুস্টার ডোজ দেয়ার কাজ শুরু হবে।’