করোনা পরীক্ষার হালনাগাদ সনদ না থাকায় প্রসববেদনায় কাতর আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক নারীকে হাসপাতালে ঢুকতে দেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বাইরে অপেক্ষা করা নারীর তখন প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হচ্ছিল।
পরে অবশ্য ওই নারীকে ভর্তি করা হয়। তবে বাঁচানো যায়নি অনাগত শিশুকে। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে ওই দৃশ্য। ওইবোতে ৬০ কোটি বার দেখা হয়েছে ভিডিওটি।
ভিডিওটি পোস্ট করেন ওই নারীর ভাতিজি। সেখানে দেখা যায়, হাসপাতালের বাইরে বসে আছেন ওই নারী। তার দুই পা বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে রক্ত। ২ ঘণ্টা চিকিৎসার জন্য তিনি সেখানে অপেক্ষা করেছিলেন।
অবস্থা গুরুতর দেখে একপর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা তাকে ভেতরে ঢুকতে দেন। সেবায় তিনি সুস্থ হয়ে উঠলেও মাতৃগর্ভে মারা যায় অনাগত শিশুটি।
চীনের শানসি প্রদেশের জিয়ান শহরের গাওজিন হাসপাতালে গত ১ জানুয়ারি এ ঘটনা ঘটে। এদিনই চীনের জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যম ওইবোতে ভিডিওটি আপলোড হয়।
ভিডিওটি ভাইরাল হলে তদন্তে নামে প্রদেশের স্বাস্থ্য বিভাগ। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে নারীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা উইম্যান ফাউন্ডেশন।
জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে ইতিমধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে বেইজিং। চাকরিচ্যুত হয়েছেন হাসপাতালের দুই কর্মকর্তা, বরখাস্ত হয়েছেন ব্যবস্থাপক। শুধু তা-ই নয়, পরিবর্তন এসেছে হাসপাতালের নীতিমালায়। গুরুতর রোগীদের জন্য খোলা হয়েছে আলাদা জোন।
দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে জিয়ানের স্বাস্থ্য বিভাগকে। এর পর পরই এসব পদক্ষেপ নেয় জিয়ানের স্বাস্থ্য বিভাগ।
করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় দুই সপ্তাহের লকডাউনে যায় জিয়ান শহর। অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন শহরের ১ কোটি ৩০ লাখ বাসিন্দা। টিকা নেয়ার পাশাপাশি করোনা শনাক্তের পরীক্ষা ছাড়া সব ধরনের সেবা বন্ধ রেখেছে শহর কর্তৃপক্ষ।
বলা হচ্ছে, করোনার নতুন ধরন যে উহান শহরে প্রথম শনাক্ত হয়েছিল ২০২০ সালে, তারচেয়েও কঠোর লকডাউন চলছে জিয়ান শহরে। তবে এই লকডাউন কার্যকরে বেগ পোহাতে হচ্ছে নাগরিক ও প্রশাসন দুই পক্ষকেই।