ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সাম্প্রতিক ঊর্ধ্বগতি 'তৃতীয় ঠেউ'-এর সংকেত দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে ১৩ হাজার ১৫৪ জন। সংক্রমণ রোধে দেশজুড়ে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়েছে।
কার্যত একদিকে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে, অন্যদিকে রাজ্যে রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। মুম্বাইয়ে নববর্ষ উদযাপন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গোটা শহরে বৃহস্পতিবার থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে, যা ৭ জানুয়ারি, ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রযোজ্য হবে। এ ছাড়া নববর্ষ উপলক্ষে শহরের যেকোনো খোলা স্থানে, রেস্টুরেন্ট, হোটেল, ব্যাঙ্কুয়েট হল, বার, ক্লাব ইত্যাদিতে সব ধরনের অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
অন্যদিকে ভারতে ওমিক্রনের সংক্রমণও বৃদ্ধি পেয়েছে। মোট ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা ৯৬১-এ পৌঁছেছে। এর মধ্যে দিল্লিতে (২৬৩) এবং মহারাষ্ট্রে (২৫২) সর্বাধিক আক্রান্ত পাওয়া গেছে। কর্ণাটকে ওমিক্রনের ৫ জনের দেহে ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে. এছাড়া পাঞ্জাবেও ১ জন শনাক্ত হয়েছে।
দেশের অনেক রাজ্যে বিধিনিষেধ শুরু হয়েছে, কিছু রাজ্যে তা বিবেচনা করা হচ্ছে।
এদিকে দিল্লিতে বুধবার ৯২৩টি নতুন করোনা সংক্রমণ রেকর্ড করেছে, যা এক দিন আগে শনাক্ত হওয়া ৪৯৬-এর দ্বিগুণের কাছাকাছি। মুম্বাইতে ২ হাজার ৫১০টি করোনা সংক্রমণ নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং বেঙ্গালুরুতে ৪০০, কলকাতায় ৫৪০ এবং চেন্নাইতে ২৯৪ জনের নতুন করে করোনভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় ছয় মাস পর প্রথমবারের মতো রাজস্থানে ১০০-র বেশি নতুন সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। দেশব্যাপী করোনা আক্রান্তের মোট সংখ্যা ৩ কোটি ৪৮ লাখ ২২ হাজার ৪০-এ পৌঁছেছে। এর মধ্যে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৮২ হাজার।
ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্য মণিপুরে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ার পর বুধবার থেকে ৩১ জানুয়ারি, ২০২২ পর্যন্ত রাজ্যে রাতের কারফিউ জারি করা হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজেশ কুমারের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। রাজ্য সরকারের আদেশ অনুসারে, ২৯ ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির শেষ পর্যন্ত রাত ৯টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত রাতের কারফিউ প্রযোজ্য হবে। উত্তর-পূর্বের আরেকটি রাজ্য মিজোরামে ২০২ জন নতুন করোনা সংক্রমিতের খবর পাওয়া গেছে।
জাতীয় রাজধানী অঞ্চলের গুরুগ্রামে আরও দুজন ওমিক্রন আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। সেখানে এখন ওমিক্রন সংক্রমণের ঘটনা বেড়ে তিনজনে দাঁড়িয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, একজন ৫৮ বছর বয়সী মহিলা এবং ৩১ বছর বয়সী এক পুরুষকে ওমিক্রন দ্বারা সংক্রমিত পাওয়া গেছে। দুজনই করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার উভয় ডোজ নিয়েছিলেন এবং বিদেশ ভ্রমণ করেননি। বুধবার গুরুগ্রামে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ১৫১টি নতুন কেস রিপোর্ট করা হয়েছে, যা গত ছয় মাসে দৈনিক শনাক্তের সর্বোচ্চ সংখ্যা। পাঞ্জাবে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন সংক্রমণের প্রথম ঘটনা জানা গেছে। চলতি মাসে ৩৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তি স্পেন থেকে এসেছিলেন। তার শরীরেই ওমিক্রন শনাক্ত হয়।