ডিজিটাল সহকারী অ্যালেক্সার বিরুদ্ধে ভোক্তার গোপনীয়তা লঙ্ঘনের মতো অভিযোগে কিছুদিন আগেই বিতর্কের মুখে পড়েছিল অ্যামাজন। এবার তাদের ব্যক্তিগত সহকারীতে ব্যবহৃত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি নতুন বিতর্কের জন্ম দিল।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, অ্যালেক্সা ১০ বছর বয়সী এক মেয়েকে বৈদ্যুতিক আউটলেটে শক্তি প্রবাহমান থাকা অবস্থায় একটি বিদ্যুৎ পরিবাহিত ধাতব মুদ্রা স্পর্শ করার পরামর্শ দিয়েছে।
মেয়েটির মা ক্রিস্টিন একটি টুইট বার্তায় জানান, বাইরের আবহাওয়া খারাপ ছিল। তাই আমরা বাসাতেই ইউটিউবের মাধ্যমে কিছু শারীরিক চ্যালেঞ্জ সম্পন্ন করছিলাম। যেমন- শুয়ে থেকে হাত দিয়ে পায়ের ডগা স্পর্শ করে ওপরে ওঠা। মেয়েটি অন্য কিছু করতে চাইছিল।
তখনই অ্যালেক্সা ওয়েবের মাধ্যমে একটি চ্যালেঞ্জ পাওয়ার কথা জানায়।
অনলাইনে এই চ্যালেঞ্জটি ‘দ্য পেনি চ্যালেঞ্জ’ নামে পরিচিত, যা এক বছর আগে শর্ট ভিডিও প্ল্যাটফর্ম টিকটকে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছিল।
যে চ্যালেঞ্জে বৈদ্যুতিক প্রবাহ চালু থাকার মধ্যেই সকেটে আধা ঢোকানো অবস্থায় প্ল্যাগে একটি ধাতব মুদ্রা স্পর্শ করতে হয়।
বৈদ্যুতিক শক্তি প্রবাহমান থাকা অবস্থায় যে কোনো ধরনের ধাতব পদার্থ সেখানে স্পর্শ করলে তা বৈদ্যুতিক শক ছাড়াও অগ্নি সংযোগের মতো ঘটনারও জন্ম দিতে পারে।
কারলাইল ইস্ট ফায়ার স্টেশনের ম্যানেজার মাইকেল ক্লাসকারের মতে, এ ধরনের দুর্ঘটনায় একজন ব্যক্তি তার আঙুল, হাত এমনকি বাহুও হারাতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের অগ্নিনির্বাপণ বিভাগের কর্মকর্তারাও এই ধরনের বিপজ্জনক চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথা বলেছেন। তারাও জানিয়েছেন, এ ঘটনার পরিণতিতে একজন ব্যক্তি গুরুতর আহত হতে পারে।
ক্রিস্টিন টুইটারে আরও জানান, তার কন্যা অ্যালেক্সার এই চ্যালেঞ্জের প্রতিবাদ জানিয়ে ‘না অ্যালেক্সা, না’ বলে চিৎকার দিয়ে ওঠে।
যদিও সে বলে, এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে ফেলার মতো যথেষ্ট পরিণত সে।
অ্যামাজনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা অ্যালেক্সাকে আপডেট করেছে। যাতে ভবিষ্যতে সে এ ধরনের চ্যালেঞ্জের আহ্বান না জানায়।
তারা একটি বার্তায় জানায়, ‘ভোক্তার বিশ্বাস আমাদের কাজের মূল চালিকাশক্তি এবং অ্যালেক্সাকে ডিজাইন করা হয়েছে সঠিক, প্রাসঙ্গিক ও দরকারি তথ্য প্রদানের জন্য।
তাই আমরা যখনই সমস্যাটি সম্পর্কে জানতে পারি। আমরা দ্রুত তা সমাধান করে ফেলি।’
টিকটকের অনেক চ্যালেঞ্জই খুবই বিপজ্জনক। টিকটকের ‘ব্ল্যাক আউট চ্যালেঞ্জ’-এ অংশগ্রহণ করতে গিয়ে গত ১২ ডিসেম্বর নায়লা অ্যান্ডারসন নামের এক শিশু প্রাণ হারায়। এ চ্যালেঞ্জে একজন ব্যক্তিকে জ্ঞান হারানোর আগ পর্যন্ত দম বন্ধ করে থাকতে হয়।