অবৈধভাবে ওয়াকিটকি আমদানি এবং নিজের কাছে রাখার অভিযোগে মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চির বিরুদ্ধে করা দুটি মামলার রায় ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিতের আদেশ দেয় আদালত।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জান্তা সরকার নিয়ন্ত্রণাধীন একটি আদালত সোমবার এই আদেশ দেয়। এই রায়ে ৭৬ বছর বয়সী এ নোবেল বিজয়ী নেত্রীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। তবে রায় পেছানোর কারণ স্পষ্ট করেনি আদালত।
চলতি বছর ফেব্রুয়ারির শুরুতে দেশটির ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি পার্টির (এনএলডি) নেতা অং সান সু চিকে গ্রেপ্তার করে সামরিক বাহিনী।
গত ৬ ডিসেম্বর ৭৬ বছর বয়সী এ নোবেলজয়ী নেত্রীকে চার বছরের কারাদণ্ড দেয় সামরিক আদালত।
গণ-অসন্তোষে উসকানি ও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বিধিনিষেধ ভাঙার অভিযোগে এমন সাজা দেয়া হয় তাকে।
সু চির সঙ্গে একই অভিযোগে সমান চার বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয় দেশটির ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট উইন মিন্তকেও।
পরে সু চির কারাদণ্ড দুই বছর কমিয়ে রাজধানী নেপিদোতে গৃহবন্দি অবস্থায় সাজা ভোগের কথা জানান দেশটির জান্তা সরকারপ্রধান মিন অং হ্লাইং।
সোমবার অবৈধভাবে ওয়াকিটকি আমদানি এবং নিজের কাছে রাখার অভিযোগে ৭৬ বছর বয়সী এ নোবেল বিজয়ী নেত্রীর বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণার কথা ছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২০ ডিসেম্বর এ মামলার রায় ঘোষণার কথা থাকলেও কোনো সুর্নিদিষ্ট কারণ ছাড়াই মামলার রায় ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছিল।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে দেশটির ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। এরপর ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার গৃহবন্দি সু চির বিরুদ্ধে ১১টি মামলা করে।
গত নভেম্বরের মিয়ানমারের জাতীয় নির্বাচন নিয়েই এনএলডি ও দেশটির সামরিক বাহিনীর মধ্যে বৈরিতা চরমে পৌঁছে। নির্বাচনে এনএলডি সরকার গঠনের মতো আসন পেলেও জালিয়াতির অভিযোগ তোলে সেনাবাহিনী।
মিয়ানমার ২০১১ সাল পর্যন্তই সামরিক শাসনের মধ্যে ছিল। বেশির ভাগ সময়েই বন্দি অবস্থায় ছিলেন দেশটির গণতন্ত্রপন্থি নেতা সু চি।
পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের নতুন করে নির্বাচিত সদস্যরা প্রথমবারের মতো সোমবার অধিবেশনের ডাক দিয়েছিল। কিন্তু তা স্থগিতের আহ্বান জানিয়ে আসছিল সেনাবাহিনী।