সৌদি আরবের সঙ্গে টানাপড়েনের মাঝে ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক উষ্ণ করার জোরালো বার্তা দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এর অংশ হিসেবে নিরাপত্তা উপদেষ্টা শেখ তাহনুন বিন জায়েদ আল নাহিয়ানকে তেহরানে পাঠাচ্ছে আবুধাবি।
ইরানি গণমাধ্যমের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার আল নাহিয়ানের তেহরানে পৌঁছনোর কথা রয়েছে। তবে এই সফরের বিষয়ে আমিরাতের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
ইরানের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা পরিষদের সচিব আলী শামখানির আমন্ত্রণে এ সফরে যাচ্ছেন আরব আমিরাতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা। সফরে ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাসহ শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনার কথা রয়েছে তার।
রয়টার্স লিখেছে, শেখ তাহনুনের এই সফরের অন্যতম লক্ষ্য দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়ন এবং আঞ্চলিক বিভিন্ন ঘটনাবলি নিয়ে আলোচনা করা। তিনি আরব আমিরাতের কার্যত শাসক ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন জায়েদের ভাই।
তাহনুনের এই সফরকে ইরানের সঙ্গে আরব আমিরাতের শীতল সম্পর্ক উষ্ণ করার চেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইয়েমেন যুদ্ধে হুতিদের একচেটিয়া সমর্থন ও মধ্যপ্রাচ্যে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টার অভিযোগে তেহরানকে এত দিন দায়ী করে আসছিল আমিরাত। এ ছাড়া উপকূলে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলার জন্যও ইরানকে দুষে আসছিল আরব বিশ্বের প্রভাবশালী দেশটি।
হরমুজ প্রণালির আবু মুসা দ্বীপের মালিকানা নিয়েও দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। ইরান দ্বীপটি দখল করে সেখানে সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করেছে।
কয়েক বছর ধরেই সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে অংশীদারত্ব আরব দুনিয়ার ভূ-রাজনীতির রূপরেখা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে এসেছে। এই জোটের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে কাজ করে যাচ্ছিলেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও আবুধাবির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন জায়েদ। তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্কও দেশ দুটির সম্পর্কে ভূমিকা রাখছিল।
সম্প্রতি বিভিন্ন ইস্যুতে দেশ দুটির মধ্যে টানাপড়েন চলছে। সবশেষ সৌদি আরব ও রাশিয়া তেল উৎপাদনের মাত্রা কম রাখার মেয়াদ আরও আট মাস বাড়ানোর প্রস্তাব দিলে আরব আমিরাত তা প্রত্যাখ্যান করে। এর জেরে ওপেক নিয়ে সৌদি আরব ও আরব আমিরাত কূটনৈতিক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টের কূটনৈতিক উপদেষ্টা আনোয়ার গারগাস গত মাসে ঘোষণা করেছিলেন, ইরানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনা কমিয়ে আনতে কাজ করবেন তারা। সম্পর্ক উন্নয়নে ইরানে প্রতিনিধি দল পাঠাবে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।