ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের আগ্রাসন নিয়ে লেবাননের তথ্যমন্ত্রী জর্জ কোরদাহির একটি বক্তব্য ঘিরে দ্বন্দ্ব শুরু হয় দুই আরব দেশের।
কোরদাহি বিদ্রোহী হুতিবিরোধী জোটের সমালোচনা করলে সৌদিসহ দেশটির আরব মিত্র রাষ্ট্রগুলো গত মাসে লেবাননের রাজধানী বৈরুত থেকে তাদের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে।
লেবাননের ওপর প্রচণ্ড চাপও সৃষ্টি করে সৌদি সরকার। এমন বাস্তবতায় শুক্রবার কোরদাহি পদত্যাগ করেন। যদিও চাপের মুখে নতি স্বীকার করবেন না বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
রিয়াদ-বৈরুত সম্পর্কের এমন তিক্ততার মধ্যে স্থানীয় সময় শনিবার সৌদির যুবরাজ ও কার্যত শাসক মোহাম্মদ বিন সালমান এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে ফোনালাপ করেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি।
যৌথ এ ফোনালাপকে আরব দুই দেশের মধ্যে নজিরবিহীন সংকট সমাধানের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ও কাতার সফর শেষে সৌদি আরবে পৌঁছান ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। সৌদিতে তার সফর শুরুর দিনে ফোনকলটি দেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী।
ফোনালাপ শেষে বৈরুত-রিয়াদের মধ্যে কূটনৈতিক সংকট নিরসনে ফ্রান্স ও সৌদি আরব প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ।
সৌদি ছাড়ার আগে ফ্রান্সের সাবেক উপনিবেশ লেবানন নিয়ে মাখোঁ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা লেবাননের জনগণকে সমর্থন করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং দেশটি যাতে মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমগুলো আবার চালু করতে পারে, তা নিশ্চিত করছি।
‘তাই আমরা চাই লেবানন সরকার একটি স্বাভাবিক উপায়ে কাজ করতে সক্ষম হোক এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আরব দেশগুলোর সঙ্গে মিলিত হোক এবং দেশের অভ্যন্তরে কার্যকর সংস্কার নিয়ে আসুক।’
সরকারি দলের ব্যর্থতা ও ব্যাপক দুর্নীতির কারণে অর্থনৈতিক সংকটে থাকা লেবাননকে সহায়তা দেয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট।
তিনি বলেছেন, লেবাননকে প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা প্রদানে একসঙ্গে কাজ করবে ফ্রান্স ও সৌদি আরব।
বৈশ্বিক পরাশক্তি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের এ বক্তব্যে সৌদি-লেবানন সম্পর্কের বরফ গলার ইঙ্গিত মিলেছে, তবে এসব কথাবার্তা আশ্বাসই থেকে যাবে নাকি বাস্তবে রূপ নেবে, তা বোঝা যাবে সময় গড়ালেই।
কেন হুতিদের বিরুদ্ধে লড়ছে সৌদি
সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন আরব জোট ইয়েমেনে শিয়া হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করে আসছে।
হুতিদের বিদ্রোহকে ইরানের ছায়াযুদ্ধ এবং এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে সৌদি।